ঢাকা: সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের লক্ষ্যে সাংবাদিক নীতিমালা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনে সংশোধনের আশ্বাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ‘সাংবাদিক/গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য নীতিমালা, ২০২৫’ নিয়ে নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন এ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, তাহমিদা আহমদ, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসি সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
আরএফইডি নেতারা সার্বিক বিষয় নিয়ে ভিন্নমত, আপত্তি তুলে ধরে জানিয়েছেন, বিদ্যমান নীতিমালা বহাল থাকলে সাংবাদিকদের অবাধ তথ্য প্রবাহ বিঘ্নিত হবে। বিদ্যমান নীতিমালা সংশোধন করার কথা জানিয়ে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরেন।
- গণমাধ্যম নীতিমালা সংশোধনে আরএফইডির উল্লেখযোগ্য সুপারিশগুলো হলো-
- কার্ডধারী গণমাধ্যম কর্মীদের ভোটকক্ষে প্রবেশে প্রিজাইডিং অফিসারকে অবহিত করার বিধান বাতিল,
- ভোটকক্ষে ১০ মিনিটের বেশি থাকা না যাওয়ার বিধান বাতিল,
- গণমাধ্যম কর্মীদের কাজে বাঁধা দিলে সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনতে হবে,
- গোপন কক্ষে অনিয়ম হলে ছবি তোলার বিধান যুক্ত করা এবং
- মনোনয়ন দাখিল থেকে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত তথ্য উন্মুক্ত রাখার বিধান।
এ সময় সভায় নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, আপনারা-আমরা সবাই স্বচ্ছ নির্বাচন চাই। একটি ট্রান্সপারেন্ট ভোটের জন্য আপনাদের সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন। ন্যায় কোনো প্রশ্রয় হবে না। কাজেই আপনাদের সহযোগিতা চাই। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে দাবি লিখিতভাবে দিয়েছেন। এটি পর্যালোচনা করে আপনাদের জন্য সহজ হয়, যেটা উভয় পক্ষের জন্য, মানুষের জন্য স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য, ফেয়ার নির্বাচনের জন্য যেটা ভালো হয় সেটা করা হবে।
এ নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ বলেন, ট্রান্সপারেন্ট নির্বাচন যদি চান তাহলে ওপেন স্পেসে নির্বাচন করার মানসিকতা তৈরি করেন, সেটাই হবে স্বচ্ছ নির্বাচন। তা নাহলে ট্রান্সপারেন্ট নির্বাচন কখনও হবে না। এতো সাংবাদিককে একসাথে একোমোডেট করা যাবে না।”
নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমদ অবাধ তথ্য প্রবাহের সুযোগ উন্মুক্ত রাখার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।
আরএফইডি সভাপতি কাজী জেবেল মত বিনিময় সভায় সাংবাদিকদের জন্য প্রস্তাবিত নীতিমালা উপস্থাপন করেন এবং তা ইসির কাছে হস্তান্তর করেন। আর সঞ্চালনা করে আরএফইডি সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। সেইসঙ্গে সহসভাপতি আনম মহিবুব উজ জামানসহ সংগঠনের নেতারা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ২৩ জুলাই সাংবাদিক/গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য নীতিমালা, ২০২৫ জারি করে ইসি। এতে ভোটকক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচার ও গোপন কক্ষের ভেতরে গিয়ে ছবি তোলায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিক সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন; পরে প্রিজাইজিং অফিসারকে অবহিত করে তথ্য, ছবি ও ভিডিও নেবেন; গোপনকক্ষের ছবি তোলা যাবে না; একসঙ্গে দুইজনের বেশি সংবাদকর্মী ভোটকক্ষে প্রবেশ করতে পারবে না; ভেতরে থাকতে পারবেন সর্বোচ্চ ১০ মিনিট ও ভেতরে নির্বাচনি কর্মকর্তা, এজেন্ট বা ভোটারের সাক্ষাৎকার নেওয়া যাবে না- এমন বিষয় যুক্ত করা হয়।