ঢাকা: ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান-কে ‘আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড’ নিয়ে অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগে পুঁজিবাজার সম্পর্কিত কার্যকলাপ থেকে বিরত রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বলেছে, দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জ, মধ্যস্থতাকারী, তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবং কমিশনের তত্ত্বাবধানে থাকা অন্য যেকোন প্রতিষ্ঠানে তাকে যেকোনো পদে নিয়োগ করা থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিএসইসি সূত্র জানায়, বুধবার এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি হয়েছে। বিএসইসির আদেশে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর আদেশ নং BSEC/IEID/Enquiry/2024/437 এর মাধ্যমে আইএফআইসি গ্যারান্টিযুক্ত শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড ইস্যু সম্পর্কিত অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত এই কমিটি কমিশনের কাছে তদন্ত ও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান (এখন থেকে “মিঃ রহমান” হিসেবে পরিচিত) আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি-র গ্যারান্টিযুক্ত শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড ইস্যু করার ক্ষেত্রে প্রতারণামূলক সহযোগিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই বন্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে সালমান এফ রহমানের আচরণ, অসৎ পদ্ধতিতে করা একটি পদক্ষেপের স্পষ্ট উদাহরণ। যা একটি গোপন উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়েছে। যা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সামগ্রিক উন্নয়নকে প্রতিকূলভাবে প্রভাবিত করছে। ভবিষ্যতেও করবে বলে মনে করা হচ্ছে। সে কারণে পুঁজিবাজারের সব বিনিয়োগকারী এবং বাজারের স্বার্থে, কমিশন মনে করে যে, রহমানকে বাংলাদেশের সিকিউরিটিজ বাজার সম্পর্কিত কার্যকলাপ থেকে বিরত রাখার জন্য তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন রয়েছে।
সে কারণে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ (১৯৬৯ সালের অধ্যাদেশ নং XVII) এর ধারা ২০ এবং ধারা ২০ক দ্বারা প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে, কমিশন সালমান এফ রহমানকে আজীবনের জন্য অবাঞ্ছিত ব্যক্তি ঘোষণা করছে বিএসইসি। এর ফলে বাংলাদেশের সিকিউরিটিজ বাজারের তার কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হচ্ছে। কমিশন বলছে. এই আদেশ জারির তারিখ থেকে কার্যকর করতে হবে।
কমিশন বলছে, তদন্তের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে এখন থেকে যেকোনো সিকিউরিটিজ বাজার নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ, স্টক এক্সচেঞ্জ, মধ্যস্থতাকারী, যেকোনো তালিকাভুক্ত কোম্পানি (স্বাধীন পরিচালক, উপদেষ্টা বা পরামর্শদাতা সহ), ট্রাস্ট, সংস্থা, বা সত্তার মধ্যে যেকোনো পদে অধিষ্ঠিত থাকার অযোগ্যতা যার ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কমিশনের অনুমোদন প্রয়োজন রয়েছে এবং স্টক এক্সচেঞ্জ, মধ্যস্থতাকারী, যেকোনো তালিকাভুক্ত কোম্পানি, ট্রাস্ট, সংস্থা, বা কমিশনের তত্ত্বাবধানে থাকা অন্য যেকোনো সত্তার যেকোনো প্রাঙ্গণ, অফিস, বা অফিসিয়াল কার্যক্রম বা প্রোগ্রামে প্রবেশ বা তার সাথে যোগাযোগ করার নিষেধাজ্ঞা কমিশন জারি করছে। আদেশ জারির পর থেকে কমিশনের সিদ্ধান্ত পরিপালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।