Friday 05 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আমরা ভারত ও রাশিয়াকে চীনের কাছে হারিয়েছি: ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:১১ | আপডেট: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:২৪

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলেছেন, দেখে মনে হচ্ছে, আমরা ভারত ও রাশিয়াকে গভীরতম, অন্ধকারাচ্ছন্ন চীনের কাছে হারিয়েছি। এর সঙ্গে তিনি ব্যঙ্গ করে তিনটি দেশেরই ‘সমৃদ্ধ’ ভবিষ্যৎ কামনা করেছেন।

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি সপ্তাহে চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আতিথেয়তা দেন।

বিজ্ঞাপন

ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য নীতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে এই তিনটি দেশই—কম-বেশি ভিন্ন মাত্রায়—যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে রয়েছে। এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে তারা শক্তি ও নিরাপত্তা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছে।

কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখে আসছে। উভয়, রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট প্রশাসনই ভারতকে একটি কৌশলগত অংশীদার হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিনিয়োগ করেছে। ট্রাম্প নিজেও তার প্রথম মেয়াদে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। ২০১৯ সালে হিউস্টনে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে ‘হাউডি মোদি’ র‍্যালিতে যোগ দেন এবং জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ‘কোয়াড’ (চতুর্ভুজ নিরাপত্তা সংলাপ) পুনরায় চালু করেন।

তবে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় এই সম্পর্ক শীতল হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের পদক্ষেপ এবং রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের জ্বালানি বাণিজ্য নিয়ে তার সমালোচনা ওয়াশিংটনের প্রভাবকে দুর্বল করেছে।

তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত এসসিও সম্মেলনটি প্রধানমন্ত্রী মোদির সাত বছরে প্রথম চীন সফর ছিল, যা ২০২০ সালের গালওয়ান উপত্যকার সীমান্তে মারাত্মক সংঘাতের প্রেক্ষাপটে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। শি জিনপিং এবং পুতিন উভয়ের সঙ্গেই বৈঠক করে প্রধানমন্ত্রী মোদি বোঝাতে চেয়েছেন, তিনি কোনো নির্দিষ্ট ব্লকের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার চেয়ে নিজের কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনকে বেশি গুরুত্ব দেন।

ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন—২৫ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক এবং ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক যা রাশিয়ার তেল আমদানির কারণে আরোপ করা হয়েছে। এই শুল্কগুলো ওয়াশিংটন তার কোনো বাণিজ্য অংশীদারের ওপর আরোপ করা সবচেয়ে কঠোর শুল্কগুলোর মধ্যে অন্যতম।

ট্রাম্প বারবার অভিযোগ করে আসছেন, ভারত এই বাণিজ্য সম্পর্ক থেকে অসমভাবে সুবিধা পাচ্ছে। তিনি সম্প্রতি বলেছেন, ‘খুব কম লোকই এটা বোঝে যে, আমরা ভারতের সঙ্গে খুব সামান্যই ব্যবসা করি, কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে বিপুল পরিমাণ ব্যবসা করে। এটি সম্পূর্ণরূপে একতরফা এক বিপর্যয়। এ ছাড়াও, ভারত তার বেশিরভাগ তেল এবং সামরিক পণ্য রাশিয়া থেকে কেনে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে খুবই কম।‘

জ্বালানি বাণিজ্য একটি বড় বিতর্কের বিষয় হয়ে উঠেছে। ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, ভারত কম দামে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কিনে মস্কোর ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়ন করছে। এর জবাবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চীন বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর একই মানদণ্ড প্রয়োগ করেনি, কারণ তারাও রাশিয়ার জ্বালানির বড় আমদানিকারক।

সারাবাংলা/এইচআই

চীন ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত মোদি রাশিয়া

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর