ভারতের রাজস্থান রাজ্যের উদয়পুরে গায়ের রঙ নিয়ে অসন্তোষের জেরে স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। সংবাদমাধ্যম বিবিসির বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।
আদালতের নথি অনুযায়ী, ভুক্তভোগী লক্ষ্মী পুলিশ, চিকিৎসক ও ম্যাজিস্ট্রেটকে জানিয়েছিলেন যে তার স্বামী কিশনদাস প্রায়ই তাকে ‘কালো’ বলে অপমান করতেন।
২০১৭ সালের ২৪ জুন রাতে কিশনদাস বাদামি রঙের একধরণের তরল নিয়ে এসে দাবি করেন এটি নাকি গায়ের রঙ ফর্সা করার ওষুধ। পরে তিনি তা লক্ষ্মীর শরীরে মাখান। তরলের গন্ধ অ্যাসিডের মতো মনে হলে প্রতিবাদ করার পর কিশনদাস আগরবাতি দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। শরীরে আগুন ধরে গেলে তিনি অবশিষ্ট তরলও ঢেলে পালিয়ে যান। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় কিশনদাসের বাবা-মা ও বোন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি।
ঘটনার প্রায় ৮ বছর পর বিচারিক কার্যক্রম শেষে আদালত তার রায়ে বলেছে, এটি মানবতাবিরোধী চরম অপরাধ এবং বিরল একটি ঘটনা হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড ছাড়া অন্য কোনো সাজা ন্যায্য হতো না। জেলা বিচারক রাহুল চৌধুরী বলেন, কিশনদাস স্ত্রীর বিশ্বাস ভেঙে অমানবিক নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করেছেন।
১৪ জন সাক্ষী এবং ৩৬টি নথি উপস্থাপনকারী রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দিনেশ পালিওয়াল এই রায়কে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে বলেন, ‘এক তরুণীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। সমাজের অন্যদের জন্য এটি শিক্ষা হয়ে থাকবে।”
অন্যদিকে কিশনদাসের আইনজীবী সুরেন্দ্র কুমার মেনারিয়া দাবি করেছেন, তার মক্কেলের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ নেই এবং ঘটনাটি দুর্ঘটনা।
ভারতে গায়ের রঙ নিয়ে বৈষম্য বহু পুরনো একটি সমস্যা। নারীরা প্রায়ই এ নিয়ে বিদ্রূপ, বৈষম্য ও পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হন। কনে-পাত্রের বিজ্ঞাপনে ফর্সা ত্বক প্রায়শই বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়। প্রসাধনী শিল্পে ত্বক ফর্সাকারী পণ্যের বাজার কোটি কোটি ডলারের।