ঢাকা: গণঅভ্যুত্থানবাদী, আমৃত্যু কমিউনিস্ট এবং প্রবীণ বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যুতে আবেগঘন শ্রদ্ধা জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর উত্তরা অঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “২০২৪ সালের জুনের ৭ তারিখে নিজের সম্পাদিত সংস্কৃতি পত্রিকায় তিনি লিখেছিলেন—‘আওয়ামী লীগকে মেরে তাড়াতে হবে’। তিনিই প্রথম জুলাই আন্দোলনকে উপমহাদেশের অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। সেই বদরুদ্দীন উমর আজ অসীম জীবনে পা দিলেন।”
সারজিস আলম তার পোস্টে উমরের রাজনৈতিক জীবন ও সংগ্রামের ধারাবাহিকতা তুলে ধরে লিখেন, “দেশভাগের শিকার এই পদযুগল পশ্চিম বাংলা থেকে কৃষক সংগ্রাম, ভাষা আন্দোলন, উনসত্তর ও একাত্তর পেরিয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত হেঁটেছে। এই পদযুগল একজন দেশান্তরীর। তার মস্তিষ্ক ছিল কমিউনিস্টের, হৃদয় ইতিহাসের অন্তঃসলিলা ধারায় অবগাহিত। দেশভাগের শিকার হয়েও তিনি জাতীয়তাবাদী আবেগে ভেসে যাননি বরং সাধারণ মানুষের মুক্তির পক্ষে কথা বলেছেন।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “জাতীয়তাবাদী বুদ্ধিজীবীরা যখন যুগান্তকারী আন্দোলনগুলোকে ভক্তির শামিয়ানায় ঢেকে রাখছিলেন, উমর তখন ঢাকনা খুলে দেখিয়েছেন—কিসের তরে মানুষের এত বিদ্রোহ, জনগণের কোন অংশ তাতে শক্তি জুগিয়েছে আর দুর্বলতাটা কোথায় ছিল বলে আজও মুক্তি আসেনি।”
বদরুদ্দীন উমরের আপসহীন চরিত্রের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সারজিস আলম লিখেন, “ভাষা আন্দোলন থেকে আজ পর্যন্ত তাকে কেউ ক্ষমতার তাপে গলে যেতে দেখেনি, লাভের আশায় নুইয়ে পড়তে দেখেনি। বার্ধক্য অনেকে শরীর ও মনের শিরদাঁড়া বাঁকা করে ফেলে, অথচ নব্বই পেরিয়েও উমর ইতিহাসের সামনে সততা ও মনীষা নিয়ে খাড়া ছিলেন। বড় মিডিয়া ও বড় লোকেরা তাকে কোণঠাসা করলেও তিনি আপসহীন ছিলেন বলে জয়টা শেষ পর্যন্ত তারই হলো।”