ঢাকা : ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন শহিদ শাহরিয়ার খান আনাসের মা সানজিদা খান দীপ্তি। জবানবন্দি শেষে তাকে জেরা করেন স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এদিন বেলা পৌনে ১২টায় সাক্ষীর ডায়াসে ওঠেন শহীদ আনাসের মা দীপ্তি। এরপর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছেলে হত্যাকাণ্ডের পুরো বর্ণনা ট্রাইব্যুনালের সামনে তুলে ধরেন তিনি। সাক্ষ্যগ্রহণের পর শুরুতে তাকে জেরা করেন শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেনের পক্ষের আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন অভি।
জেরার একপর্যায়ে ছেলের লেখা শেষ চিঠি নিয়ে আনাসের মায়ের কাছে জানতে চান আইনজীবী অভি। তিনি বলেন, ‘আনাসের লেখা চিঠিটি কী আনাসের?’
জবাবে সাক্ষী দীপ্তি বলেন, ‘কেমন ভ্রান্ত প্রশ্ন করেন। আমার ছেলেকে কি আপনারা বেশি চেনেন। চিঠির লেখা ও নিচের স্বাক্ষর সবই আনাসের।’
আনাসের ময়নাতদন্ত নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ময়নাতদন্ত হয়নি। কারণ দ্রুত লাশ দিয়ে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তার সহযোদ্ধা রাব্বী ও সৌরভও পূর্বপরিচিত ছিল না।’
এ সময় সাক্ষীর উদ্দেশ্যে আরশাদের আইনজীবী অভি বলেন, ‘আপনি ট্রাইব্যুনালে অসত্য সাক্ষ্য দিয়েছেন।’
জেরায় আইনজীবীর এমন প্রশ্নে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এই সাক্ষী বলেন, ‘আমি কিছু বললেই দোষ হবে। যেদিন আপনার সন্তানের বুকে গুলি লাগবে, সেদিনই বুঝবেন।’
প্রতিত্তোরে অভি বলেন, ‘আপনি ন্যায়বিচার পান আমরাও চাই। আপনার ছেলের মৃত্যুতে আমরাও ব্যথিত। তবে আইনজীবী হিসেবে এমন প্রশ্ন করা আমাদের কর্তব্য।’
এদিন দীপ্তি ছাড়াও আরও দুজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সবমিলিয়ে মোট ১১ জনের জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া আজ সকালেও কারাগার থেকে এ মামলার চার আসামিকে হাজির করেছে পুলিশ।
তারা হলেন- শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।
তাদের উপস্থিতিতেই ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিচ্ছেন সাক্ষীরা। এ মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১১ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দিনটি ধার্য করা হয়।