Monday 08 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সম্পত্তি আত্মসাতের পর সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ, ব্যাংক হিসাব জব্দ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:০৭

খুলনা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাবেক সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট আব্দুস সালাম মুর্শেদী – (ফাইল ছবি : সংগৃহীত)

ঢাকা: জাল রেকর্ডপত্র তৈরি করে সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের পাশাপাশি কর ফাঁকির তথ্য পাওয়া গেছে খুলনা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাবেক সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা যায়, আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে ২২ কোটি টাকার আয়কর ফাঁকি তথ্য উদ্ঘাটন করেছে আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট। ফাঁকি স্বীকার করে ইতোমধ্যে ৩ কোটি টাকা পরিশোধ করেছেন তিনি। কিন্তু বাকি টাকা পরিশোধ না করায় তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে এনবিআর।

জানা যায়, বাফুফের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর একটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তার আয়কর ফাঁকি তদন্ত শুরু করে আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট। ব্যাংকের তথ্য, আয়কর সংক্রান্ত নথি যাচাই শেষে প্রায় ২২ কোটি টাকার আয়কর ফাঁকি উদ্ঘাটন করেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। পরে কর ফাঁকির কথা স্বীকার করে ফাঁকি দেওয়া ২২ কোটি টাকার মধ্যে ৩ কোটি টাকা পরিশোধ করেন মুর্শেদী। বাকি থাকা কর পরিশোধ করার অঙ্গীকার করেও তিনি পরিশোধ করেন নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সালাম মুর্শেদীর ব্যাংক হিসাব জব্দ (ফ্রিজ) করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সূত্রমতে, সালাম মুর্শেদী ছাড়াও তার স্ত্রী শারমিন সালাম, ছেলে ইশমাম সালাম ও মেয়ে শেহরিন সালামের আয়কর ফাইল খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট। এছাড়া সালাম মুর্শেদীর মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আয়কর ফাইলও তদন্ত করবেন এই ইউনিটের কর্মকর্তারা।

এদিকে জাল রেকর্ডপত্র তৈরি করে পরিত্যক্ত সম্পত্তি হস্তান্তর, অনুমতি ও নামজারি করে গুলশান-২ আবাসিক এলাকায় সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের ঘটনায় দুদকের মামলায় আসামির তালিকায় রয়েছেন সালাম মুর্শেদী। একইসঙ্গে আসামির তালিকায় যোগ হয়েছেন ওই সম্পত্তি দখল করা অপর অংশীদার ইফফাত হক ও তার স্বামী মোহাম্মদ আব্দুল মঈন। এ দম্পতি ২৭ কাঠার মধ্যে ১২ কাঠা দখল করেছিলেন। বাকি ১৫ কাঠা দখল করে বাড়ি নির্মাণ করেছিল সালাম মুর্শেদী।

গত বছর (২০২৪ সাল) ৩১ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর বিশেষ জজ আদালতে এ সংক্রান্ত মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। দুদকের উপপরিচালক মো. আনোয়ারুল হক ও উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ তদন্তে দেশের সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার ও তার পরিবার এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আর্থিক হিসাব ও লেনদেনের তথ্য চেয়ে দুদক-এর পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের একজন পরিচালক জানান, সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে সরকারি বাড়ি দখল ছাড়াও তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি, ফ্ল্যাট ক্রয়সহ স্ত্রী ও নিজ সন্তানদের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদের অর্জনের তথ্য দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের হাতে এসেছে। এছাড়া তার স্ত্রীর নামে দেশের বাইরে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ থাকার অভিযোগ রয়েছে। তার দুর্নীতির মামলা তদন্তকালে এসব বিষয় আমলে নেওয়া হবে।

সারাবাংলা/আরএস

আবদুস সালাম মুর্শেদী আয়কর ফাঁকি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর