ফরিদপুর: ফরিদপুরে সৌদি বাংলা প্রাইভেট হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার শিকার হয়েছেন এক নারী। তবে, ভুল চিকিৎসার বিষয়টি বুঝতে পেরে তাৎক্ষণিক পালিয়ে যান ওই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও সংশ্লিষ্ট সবাই।
পরে ছাত্র ও সাংবাদিকদের সহায়তায় ফরিদপুরের সিভিল সার্জন একটি টিম নিয়ে এসে ভুক্তভোগী রোগীর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে রোগীর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে তাৎক্ষণিক ফরিদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে পাঠান। এ ছাড়া, ওই হাসপাতালে ভর্তি থাকা অন্য রোগীদের একটি সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করে সিলগালা করে দেওয়া হয় বেসরকারি এই হাসপাতালটি।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) পাইলসের অপারেশন করানোর উদ্দেশ্যে সৌদি বাংলা প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হন ভুক্তভোগী রোগী হ্যাপি বেগম।
হ্যাপির স্বজন তন্ময় শেখ জানান, ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আসলাম শেখের স্ত্রী হ্যাপি বেগম পাইলসের অপারেশন করানোর উদ্দেশ্যে সোমবার সকালে ভর্তি হন ফরিদপুর শহরের সৌদি বাংলা প্রাইভেট হাসপাতালে। বিকেলে তাকে নেওয়া হয় অপারেশন থিয়েটারে। ডা. নজরুল ইসলাম নামের এক চিকিৎসক মিসেস হ্যাপির অপারেশন করেন। অপারেশনের পরই বুঝতে পারেন গলব্লাডার না, ওই রোগী পাইলসের অপারেশন করাতে এসেছিলেন। বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেলে ওই চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট সবাই সঙ্গে সঙ্গে পালিয়ে যান।
এমন ভুলের ঘটনায় রোগীর স্বজনেরা রোগীকে সুস্থ করতে বিভিন্ন দফতরের শরণাপন্ন হন।
ছাত্র প্রতিনিধি আবরার ইতু জানান, এক পর্যায়ে এই বিষয়টি তাদের নজরে আসে। সন্ধ্যার পরে হাসপাতালে পৌঁছে যান ছাত্রসমাজ ও সংবাদকর্মীরা। পরে তাদের চেষ্টায় রাত নয়টার পরে একটি টিম নিয়ে সেখানে আসেন ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান। এদিকে, চিকিৎসক, নার্স ও সংশ্লিষ্টরা পালিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ওই হাসপাতালে ভর্তি থাকা অন্যান্য রোগীরা।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, নার্স ও চিকিৎসকের গাফিলতির কারণেই এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। তিনি জানান, রোগীকে দ্রুত সুস্থ করে তুলতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ওই হাসপাতালটিতে ভর্তি অন্য রোগীদের সরকারি জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করে হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, রোগীর ব্লাড পেশার স্বাভাবিক রয়েছে, আপাতত আশঙ্কামুক্ত বলে জানান তিনি।
স্বজনদের দাবি, কমিশন এজেন্ট/দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে ওই রোগীকে হাসপাতালটিতে চিকিৎসার জন্য আনা হয়েছিল।