Tuesday 09 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাবনা-১ আসনের সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে ইসি চত্বরে বিক্ষোভ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:৩৩ | আপডেট: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:২৫

পাবনা-১ আসনের সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীরা – ছবি : সারাবাংলা

‎ঢাকা: ‘অবৈধ গেজেট মানি না, মানবো না’; ‘পাবনার সাঁথিয়া-বেড়া ভাই ভাই, বিভক্তি মানি না’- এ ধরনের স্লোগান দিয়ে ঢাকায় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন পাবনা-১ সংসদীয় আসনের এলাকাবাসীরা।

মঙ্গলবার (০৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে শত শত লোক জড়ো হয়ে উল্লেখিত দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

প্রসঙ্গত: গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকে সারাদেশের বিভিন্ন জায়গাতে সীমানা নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন সংশ্লিষ্ট আসনের এলাকাবাসীরা।

পাবনা-১ আসনের মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে দাবির সপক্ষে ৭টি কারণ তারা তুলে ধরা হয়। এগুলো হচ্ছে- ১. ভৌগলিক নিকটবর্তীতা: বেড়া উপজেলা পরিষদ থেকে সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের দূরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটারের কম। অপরদিকে বেড়া উপজেলা পরিষদ থেকে সুজানগর উপজেলা পরিষদের দূরত্ব প্রায় ৩৮-৪০ কিলোমিটার। সুতরাং ভৌগলিক বাস্তবতায় সাঁথিয়ার সাথেই বেড়ার সংযোগ সবচেয়ে যৌক্তিক।

‎২. ভোটার সংখ্যার ভারসাম্য: সাঁথিয়া (১০ টি ইউনিয়ন ১ টি পৌরসভা) ভোটার সংখ্যা: ৩ লাখ ১৭ হাজার ৩৮ জন। এ সংখ্যা নির্বাচন কমিশনের নীতিমালার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। অপরদিকে বেড়া-সুজানগর একত্র করলে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ৬২ হাজার ৭৬৭ জন, যা অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও অতিরিক্ত।

‎৩. নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা: নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী ভোটার পার্থক্য সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশের এর মধ্যে থাকতে হবে। বেড়া ও সুজানগর একত্র করলে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি হয়ে যায়, যা নীতিমালা বহির্ভূত।

‎৪. শিক্ষা ও সংস্কৃতির মিল: সাঁথিয়া, বেড়া ও সুজানগর উপজেলার জনগণের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও জীবনধারা এক ও অভিন্ন। তাই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকেও সাঁথিয়া-বেড়া সংযুক্তিই যৌক্তিক।

‎৫. নদী বন্দর ও যোগাযোগ ব্যবস্থা: বেড়া উপজেলায় ৩টি প্রধান নদী বন্দর রয়েছে- বেড়া পোর্ট, নগরবাড়ি ঘাট, কাজিরহাট ঘাট, পূর্বের সীমানায় ১টি বন্দর পাবনা-১ এ এবং ২টি বন্দর পাবনা-২-এ অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা ভারসাম্যপূর্ণ। যদি সুজানগরের সাথে বেড়া উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৪ টি ইউনিয়ন যুক্ত করে দিলে ৩ টি নদী বন্দরই পাবনা ২ সুজানগর এ চলে যায়, অপর দিকে সাঁথিয়া উপজেলার কোন নদী বন্দর থাকে না যার কারণে কোন উন্নয়ন হবে না। সাঁথিয়ার সাথে বেড়ার সড়ক যোগযাযোগ দুরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটার আর বেড়া উপটজেলা থেকে সুজানগর উপজেলার দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার সুতরাং একজন সাধারন নাগরিকের জন্য, তাই প্রশাসনিক বা দাপ্তরিক কাজ করা খুবই কষ্টকর।

‎৬. প্রশাসনিক ভারসাম্য: বেড়া আংশিক সুজানগর উপজেলার সাথে যুক্ত হলে সুজানগরে ২টি পৌরসভা ও ১৯টি ইউনিয়ন হবে, অপরদিকে সাঁথিয়া উপজেলাতে মাত্র ১টি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন রয়েছে। যা সুজানগর উপজেলার অর্ধেক হয়। সুতরাং সাথিয়া উপজেলার চেয়ে সুজানগর উপজেলা দ্বিগুন হয় যা কোন মতেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এতে প্রশাসনিক সেবায় অসামঞ্জস্যতা তৈরি হবে।

‎৭. ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: অতীতেও ৪০ বছরের ইতিহাসে নির্বাচন কমিশন ভৌগলিক বাস্তবতা, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও যোগাযোগের সুবিধা বিবেচনা করে পাবনা-১ (সাঁথিয়া বেড়া আংশিক) ও পাবনা-২ (সুজানগর+ বেড়া আংশিক) নির্ধারণ করেছিল। যাহা ছিলো সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত ও বাস্তব সম্পূর্ণ।

‎কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী এলাকাবাসীরা বলেন, ভৌগলিক অবস্থান, ভোটার ভারসাম্য, নীতিমালা, শিক্ষা-সংস্কৃতি, নদী বন্দর, যোগাযোগ ব্যবস্থা, প্রশাসনিক কাঠামো ও ঐতিহাসিক বাস্তবতা বিবেচনায় সাঁথিয়া আংশিক বেড়া পুনর্বহালই একমাত্র যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য সমাধান।

বিজ্ঞাপন

‎সারাবাংলা/এনএল/আরএস

পাবনা-১ আসন সীমানা পুনর্বহাল দাবি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর