ঢাকা: গণমুখী-মানবিক বিচারব্যবস্থা গড়ে তুলতে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নিরলস প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. মাহমুদ আল-হাব্বাশ।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) হেয়ার রোডস্থ প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনে আয়োজিত নৈশভোজে এ প্রশংসা করেন তিনি। বাংলাদেশে সফররত ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতির সম্মানে এ আয়োজন করা হয়।
এ সময় বিভিন্ন বিষয়ে দুই দেশের প্রধান বিচারপতির দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়। বিশেষত চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে বিচার বিভাগের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা পুনরায় ফিরিয়ে আনতে গণমুখী বিচারব্যবস্থা বিনির্মাণে রোডম্যাপ কার্যক্রমের অগ্রগতি তুলে ধরেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সাধারণ জনগণের মৌলিক মানবাধিকারসহ ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জনগণ সবসময়ই সহমর্মী ও সংহতিশীল। তিনি বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের দীর্ঘদিনের সুদৃঢ় কূটনৈতিক সম্পর্কের কথাও উল্লেখ করেন।
অপরদিকে, ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের কল্যাণে ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ সহজতর করা এবং দখলদার বাহিনীর প্রত্যাহারের বিষয়ে ফিলিস্তিন সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন ড. মাহমুদ আল-হাব্বাশ। তিনি গাজা উপত্যকায় একটি সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ফিলিস্তিন সরকার কার্যকর রাজনৈতিক সমাধান নিশ্চিতের জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিকে জানান, নিউইয়র্কে একটি আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। যা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বৈধতা নিশ্চিতকরণ, এ অঞ্চল সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘের প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়ন ও আরব শান্তি উদ্যোগের আলোকে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি এই লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের জনগণের অব্যাহত সমর্থন প্রত্যাশা করেন।
নৈশভোজ-দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের বিচার বিভাগীয় অঙ্গনে সহযোগিতা-বন্ধুত্বের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। উভয় দেশের প্রধান বিচারপতির মধ্যে অনুষ্ঠিত সৌহার্দ্যপূর্ণ মতবিনিময় ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে এবং ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও শান্তি প্রতিষ্ঠার যৌথ প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
নৈশভোজে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি ফারাহ মাহবুব, ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতির সফরসঙ্গী হামজা ডানা, সুহাইব সারহান, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত মো. ইউসুফ রামাদান, ডেপুটি হেড অব মিশন জিয়াদ হামাদ, মিশনের অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকীসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম এশিয়া বিভাগের পরিচালক মোস্তফা জামিল খান উপস্থিত ছিলেন।