শুল্ক আরোপের পর ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের চলমান পরিস্থিতিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি বিশেষ সম্পর্ক আছে। চিন্তার কিছু নেই।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘ভারত এবং আমেরিকা ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও স্বাভাবিক অংশীদার। আমি নিশ্চিত যে আমাদের বাণিজ্য আলোচনা ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্বের সীমাহীন সম্ভাবনাকে উন্মোচন করবে। আমাদের দলগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই আলোচনা শেষ করার জন্য কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার অপেক্ষায় আছি। আমরা দু’দেশের মানুষের জন্য একটি উজ্জ্বল এবং আরও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করব।’
ট্রাম্প পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী মোদির এই পোস্টটি তার নিজস্ব সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ পুনরায় পোস্ট করেছেন, যা দুই দেশের সম্পর্কের বরফ গলার ইঙ্গিত দেয়।
কয়েক সপ্তাহ আগে এমন খবর প্রকাশ হয়েছিল, ভারতের রুশ তেল বাণিজ্যকে লক্ষ্য করে ট্রাম্পের চাপানো ‘অযৌক্তিক’ শাস্তিমূলক শুল্কের কারণে দিল্লির ক্রমবর্ধমান হতাশার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী মোদি অন্তত চারবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ফোন এড়িয়ে গেছেন।
মঙ্গলবার ট্রাম্প ঘোষণা করেন, তার প্রশাসন ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক আলোচনা আবার শুরু করেছে। তিনি ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ পোস্ট করে লেখেন, ‘আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য বাধাগুলো নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে “খুব ভালো বন্ধু” হিসেবে বর্ণনা করেন। একইসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন “আগামী সপ্তাহগুলোতে” তার সঙ্গে কথা বলার অপেক্ষায় আছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে আমাদের উভয় মহান দেশের জন্য একটি সফল সমাধানে পৌঁছাতে কোনো অসুবিধা হবে না।’
ট্রাম্পের এই নতুন মন্তব্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নরম সুরের পর এসেছে। শুক্রবার হোয়াইট হাউসের এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমি সবসময়ই প্রধানমন্ত্রী মোদির বন্ধু থাকব। তাকে “একজন মহান প্রধানমন্ত্রী” বলে অভিহিত করেছিলেন।
যদিও ট্রাম্প দিল্লির সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা পুনরায় শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ভারতের ওপর ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এর কারণ, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি-কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি আলোচনায় ট্রাম্প চীন ও ভারতের মতো তেল ক্রেতাদের ওপর ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের সম্ভাবনা তুলে ধরেন।
গত মাসে ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেন, যার মধ্যে ভারত কর্তৃক রুশ অপরিশোধিত তেল কেনার জন্য অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্কও অন্তর্ভুক্ত ছিল। ভারত এই মার্কিন পদক্ষেপকে “অযৌক্তিক, অন্যায্য এবং অগ্রহণযোগ্য” বলে বর্ণনা করেছিল।