ঢাকা: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, বহুল আলোচিত জুলাই সনদ ২০২৫-এর চূড়ান্ত খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘সবপক্ষের মতামতের প্রতিফলন ঘটিয়ে সনদের চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। আজই তা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে।’
তিনি জানান, জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ৮৪টি বিষয়ে নোট অব ডিসেন্টসহ ঐক্যমত হয়েছে। শনিবারের (১৩ সেপ্টেম্বর) মধ্যে দলগুলোকে সনদে সই করার জন্য দুই প্রতিনিধির নাম পাঠাতে বলা হবে।
ড. রীয়াজ বলেন, ‘বাস্তবায়নের একটি প্রক্রিয়ায় ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারব বলে আশা করছি।’ তবে আজকের বৈঠকে চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে সমঝোতা হয়নি। এ জন্য আগামী রোববার আবারও আলোচনা হবে।
তিনি জানান, দলগুলোর মতামত ও নোট অব ডিসেন্টসহ একটি খসড়া এরই মধ্যে দুই দফায় পাঠানো হয়েছে। চূড়ান্ত সনদের কপি রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হবে। ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘এই সনদে জবরদস্তিমূলক কিছু নেই। এটি সম্মিলিত চিন্তা ও আলোচনার ফসল। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতেই এর চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হবে।’
এদিন বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। বৈঠকে জামায়াত বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ বাস্তবায়নের দাবি জানায়। গণ সংহতি আন্দোলন আদালতের মতামত নিয়ে সংসদকে সংস্কার বাস্তবায়নে বাধ্য করার আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দেয়। আর আগামী সংসদেই সাংবিধানিক সংস্কার বাস্তবায়নের দাবি জানায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি।
সংবিধান সংশ্লিষ্ট নয় এমন সংস্কার বর্তমান সরকারই বাস্তবায়ন করতে পারবে— বৈঠকে এমন বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। তবে সংবিধান সংশোধন কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, এ বিষয়ে এখনো সমঝোতা হয়নি। বৈঠকে কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য গণভোট, বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ, অধ্যাদেশ ও নির্বাহী আদেশ ব্যবহারের প্রস্তাব দেয়।
পরে বিশেষজ্ঞ প্যানেল পাঁচটি বিকল্প পদ্ধতি বিবেচনা করে। পদ্ধতিগুলো হলো- অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট, বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ এবং সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়া। বিস্তারিত আলোচনার পর প্রাথমিকভাবে চার উপায়ে বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়। সেগুলো হলো অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট এবং বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ।