ঢাকা: জাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান বলেছেন, রাতের মধ্যেই ভোট গণনা শেষ করে জাকসুর ফলাফল ঘোষণা করা হবে। তবে সেটার নির্দিষ্ট সময় নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। রাতের শেষভাগেও (ফল ঘোষণা) করা হতে পারে।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মনিরুজ্জামান বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাত নয়টা থেকেই ভোট গণনা শুরু করা হয়েছে। ২১ টি হলের মধ্যে ১৯ টি হলের ভোট গণনা শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা চলছে। আমরা দ্রুত ভোট গণনার জন্য জনবল বৃদ্ধি করেছি। প্রার্থীদের এজেন্টের সামনে স্বচ্ছতা বজায় রেখে ভোট গণনা করা হচ্ছে।’ তিনি জানান, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেই এমন কাউকে ভোট গণনায় রাখা হয়নি।
এর আগে জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেছেন, যে লোকবল আছে তাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ফলাফল রাত ১০ থেকে ১১টা নাগাদ ভোটের ফলাফল প্রকাশ করা সম্ভব হতে পারে।
ভোট গণনা ও ফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হওয়ায় শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ তথ্য জানান তিনি।
রাশিদুল আলম বলেন, ওএমআর মেশিন দিয়ে ভোট গণনার জন্য আমাদের প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু বেশ কিছু প্রার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ম্যানুয়ালি (হাতে ভোট গণনা) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে একটু বেশি সময় লাগবে।
তিনি বলেন, যেহেতু ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনার বিষয়ে সবার আগে থেকে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি বা জানাশোনা ছিল না, তাই ভোট গণনার শুরুর দিকে অনেকটা ধীরগতিতে কাজ এগিয়েছে। পরে অবশ্য ভোট গণনার গতি বেড়েছে। সিনেট ভবনের কক্ষে শুরুতে পাঁচটি টেবিলে ভোট গণনা শুরু হয়। এ টেবিলগুলো সিসিটিভি ক্যামেরার পর্যবেক্ষণে ছিল। পরে আজ সকালে টেবিলের সংখ্যা বাড়িয়ে ১০টি করা হয়েছে। এসব টেবিলের পাশেও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছি, যাতে সবকিছু সবাই পর্যবেক্ষণ করতে পারে ও রেকর্ড হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তিনি জানিয়েছিলেন শুক্রবার দুপুরের মধ্যে নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা সম্ভব হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (জাকসু) ভোট গ্রহণ শুরু হয় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ভোট গ্রহণ শেষ হয় বিকেল ৫টায়, যদিও কয়েকটি হলে অনেক দেরিতে তা শেষ হয়। তবে আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ভোট গণনা শেষ হয়নি। ফলে নির্বাচনের ফলও প্রকাশ করা হয়নি।
জাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৩ জন। এর প্রায় ৬৭-৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। কেন্দ্রীয় সংসদে মোট ২৫টি পদে লড়েছেন ১৭৭ জন প্রার্থী। ভিপি পদে ৯ ও জিএস পদে ৮ জন প্রার্থী ছিলেন। ছাত্রীদের ১০টি আবাসিক হলে ১৫০টি পদের মধ্যে ৫৯টিতে কোনো প্রার্থী ছিলেন না। একজন করে প্রার্থী ছিলেন ৬৭টি পদে। সে হিসাবে মাত্র ২৪টি পদে ভোট নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলের মধ্য দুটি হলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে, নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করেছে ছাত্রদল। আরো চারটি প্যানেলের প্রার্থীরা ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এই চারটি প্যানেল হলো ‘সম্প্রীতির ঐক্য’, ‘সংশপ্তক পর্ষদ’, ‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’ ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আংশিক প্যানেল।