Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘শিক্ষায় বৈষম্য উন্নয়ন গিলে খাচ্ছে’


৭ জুলাই ২০১৮ ২১:২৯

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: সরকার উন্নয়নের কথা বললেও শিক্ষাখাতে বৈষম্য থেকে যাচ্ছে। ৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার যে চেতনা সেখানেও ধোকাবাজি। সে সময় জাতীয় বাজেটে শিক্ষাখাতের যে বরাদ্দ ছিল এখন সে তুলনায় কমেছে। ফলে সামগ্রিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হয়ে একটা অন্তঃসারশূন্য জাতিতে পরিণত হচ্ছে আমাদের নতুন প্রজন্ম। এটি রাষ্ট্রের জন্য ভয়ানক দুঃসংবাদ।

শনিবার (৭ জুলাই) রাজধানীর মুক্তিভবনে মাসিক শিক্ষাবার্তা আয়োজিত স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি নিয়ে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।

‘শিক্ষার দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে’ শিরোনামে এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষাবিদ তাইবুল হাসান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক আকমল হোসেন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা ও শিক্ষাবিদ মোশতাক আহমেদ, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ডা. ফজলুর রহমান, রাজনীতিক রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, অভিভাবক ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু।

শিক্ষাবার্তা সম্পাদক এ এন রাশেদা অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ অনশনরত শিক্ষকদের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষাবিদ মোশতাক আহমেদ বলেন, রাস্তায় যেসব শিক্ষক আন্দোলন করছে তারা এদেশের নাগরিক। বছরের পর বছর তারা বিনা বেতনে চাকরি করছেন। তাদের অভুক্ত রেখে উন্নয়নের গান গাওয়া যায় না।

স্বীকৃতি দেওয়ার পরও এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত না করাকে স্ব-বিরোধী আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার কিছু কিছু ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলুণ্ঠিত করছে। সামগ্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আঘাত না করলে এই বৈষম্য থেকে বের হওয়া যাবে না।

বিজ্ঞাপন

অধ্যাপক ডা. ফজলুর রহমান বলেন, গত ১০ বছরে শিক্ষা ব্যবস্থায় কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন ছাড়া আর কিছুই হয়নি। ভবন হয়েছে, কমেছে শিক্ষার মান ও শিক্ষকের মর্যাদা। শিশুদের কাঁধে বইয়ের ব্যাগ দিনকে দিন ভারি হচ্ছে কিন্তু তরুণ-যুবকরা জ্ঞানে-নৈতিকতায় পঙ্গু হচ্ছে।

রাজনীতিক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, অভুক্ত অনাহারী শিক্ষকরা দফায় দফায় অনশন করলেও সরকার তাদের দিকে না তাকিয়ে উন্নয়নের স্লোগানে নতুন নতুন শব্দ যোগ করছে। এতে রাষ্ট্রের মর্যাদা বাড়ে না, বরং কমে।

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান বছরের পর বছর শিক্ষার্থী পড়াচ্ছে, পাস করাচ্ছে সেখানে কী করে শিক্ষকরা বেতন বঞ্চিত থাকেন! তা হলে এসব প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতিই বা কেন দেওয়া হয়েছিল- প্রশ্ন রাখেন তিনি।

অভিভাবক ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন, একজন সাবেক বাম নেতা শিক্ষার দায়িত্বে আসার পর দেশের শিক্ষার বারোটা বেজেছে। ঘুষ-দুর্নীতি এখন প্রতিটি জায়গায়। রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল ও ভিকারুন্নেসা স্কুলের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী ভর্তি সবগুলো জায়গায় ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে। অথচ গ্রাম-গঞ্জের হাজার হাজার শিক্ষক বিনা বেতনে বছরে পর বছর পাঠদান করছেন। এটা বড় রকমের রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি। এর সমাধান হওয়া জরুরি।

অনুষ্ঠানে চাপাইনবাবগঞ্জের বহিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম, পঞ্চগড়ের শিক্ষক আবু বকর মো. এরশাদ আলী ও টাঙ্গাইলের শিক্ষক জুয়েল বক্তব্য রাখেন।

পরে অনুষ্ঠানের আয়োজন শিক্ষাবার্তা সম্পাদক এ এন রাশেদা আগামী সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ অনশনরত শিক্ষকদের সঙ্গে বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত সংহতি প্রকাশে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ সবার প্রতি আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমএস/এটি

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর