ঢাকা: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ও বাহাদুর শাহ পার্ক সংলগ্ন এলাকা থেকে অবৈধ বাস–লেগুনা স্ট্যান্ড ও ফুটপাতের দোকানপাট উচ্ছেদ করে একটি নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস)।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) জবিশিসের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন সই করা এক বিবৃতিতে এই উদ্যোগের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, এ দাবিটি নতুন নয়। দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র এক সপ্তাহ পর, ২০২৫ সালের ৮ জানুয়ারি শিক্ষক সমিতি প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে এই দাবি জানায়। অবৈধ স্ট্যান্ড ও স্থাপনা উচ্ছেদের মূল উদ্দেশ্য হলো অত্র এলাকার অসংখ্য স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে যাতায়াত ও জীবন রক্ষা করা। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন, ট্রাফিক কর্তৃপক্ষ, বাস মালিক সমিতিসহ পাঁচটির অধিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, কিন্তু পূর্বে কোনো সুষ্ঠু সমাধান আসেনি।
অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদের কার্যক্রম গতি বৃদ্ধি পায় যখন সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখে (২০২৫ সাল) বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী দুটি বাসের চাপায় গুরুতর আহত হন। এই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সোচ্চার হলে ডিসি ট্র্যাফিকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং বাস মালিক সমিতির সকল নেতৃবৃন্দের সাথে একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই সভার সম্মিলিত সিদ্ধান্তের আলোকে রায়সাহেব বাজার মোড় থেকে বাস চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে, এই কৃতিত্ব কেবল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একক নয়, বরং সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। তৎপরবর্তীতে, করণীয় নির্ধারণে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এই সভায় অত্র এলাকার নয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন, যেখানে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তিনি মনে করেন, এখানে এককভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কিছু নেই এবং সুন্দর একটি পরিবেশ তৈরি হলে এর সুফল শুধু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বরং সবাই উপভোগ করবে।
সুবিধা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয় যে, অবৈধ স্ট্যান্ড না থাকার ফলে সৃষ্ট সুবিধাগুলো মধ্যে রয়েছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে বসে না থাকা, শিক্ষার্থীদের জীবন ঝুঁকিমুক্ত হওয়া, বায়ুদূষণ ও শব্দদূষণ থেকে মুক্তি এবং একটি সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত হওয়া। অনেকের দৃষ্টিতে এ সকল স্ট্যান্ড ও দোকানপাটের মাধ্যমে অবৈধ লেনদেন ও মাদকের কারবার চলে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সাময়িক কিছুটা অসুবিধা হলেও বৃহত্তর স্বার্থে একটি সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টিতে সবাই ঐক্যমত পোষণ করবেন বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। জনগণের সুবিধার্থে অটো রিকশার গতি নিয়ন্ত্রণ, রিকশার ন্যায্য ভাড়া নির্ধারণ এবং বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেবে মর্মে আশ্বাস দিয়েছে। এসব বিষয়েও শিক্ষক সমিতি সবাইকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছে।
ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কারো প্রতিযোগিতার মানসিকতা নয়, বরং সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউকে এ ব্যাপারে কোনো বিতর্কে না জড়ানোর অনুরোধ করেছেন।