Monday 15 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিজিএমইএ-ইউএসটিআর বৈঠক,পালটা শুল্ক নিয়ে আলোচনা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:৫২ | আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:৩৯

– ছবি : বিজিএমইএ

ঢাকা: ঢাকা সফররত মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদল (ইউএসটিআর)-এর সঙ্গে বৈঠক করেছে দেশের তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। রাজধানীর গুলশানে চিফ অফ মিশন রেসিডেন্সে এ সভার আয়োজন করে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিজিএমইএ’র পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বৈঠকে মূলত বাংলাদেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানিতে পালটা শুল্ক হার কমানো এবং সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে বিজিএমইএ জানায়।

বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, আমরা ইতিমধ্যেই ২০ শতাংশ ট্যারিফ সুবিধা অর্জন করেছি, যা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে, প্রকৃতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ থেকে রফতানির ওপর গড় এমএফএন শুল্ক ১৬.৫ শতাংশ এবং এর সঙ্গে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক মিলিয়ে মোট শুল্কের পরিমান প্রায় ৩৬.৫ শতাংশ, যা বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বেসরকারিখাতে সর্ববৃহৎ কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী খাত, পোশাক শিল্পের যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রফতানির ধারা অব্যাহত রাখতে রাখতে শুল্ক আরও কমানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, স্ট্যাকিং মেথড’ ব্যবহার করে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে এ শুল্কের সমন্বয় করা যেতে পারে। এই কৌশলটি কেবল শুল্কের বোঝা কমাবে না, বরং মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা আরও বাড়িয়ে দেবে।
আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি নির্বাহী আদেশ নিয়েও কথা হয়, যা অনুসারে বাংলাদেশ থেকে রফতানিকৃত পোশাকে যদি ২০ শতাংশ বা তার বেশি যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহৃত হয়, তবে সেই পণ্যের ওপর আরোপিত ২০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক থেকে আনুপাতিক হারে অব্যাহতি পাওয়া যাবে।
বিজিএমইএ নেতারা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে জানান, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প এই সুযোগকে কাজে লাগাতে অত্যন্ত আগ্রহী। তবে এর জন্য কোন প্রক্রিয়া বা ফর্মুলায় যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহারের মূল্যায়ন ও ট্রেসেবিলিটি তা নিশ্চিত করা হবে, তা তারা জানতে চান।

জবাবে মার্কিন প্রতিনিধিদল জানান, ইউএস কাস্টমস বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে কাজ করছে। আশা করা যায়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এটি শেষ হবে।

বৈঠকে বাংলাদেশের শ্রম আইন ২০০৬-এর সংশোধনী প্রস্তাবনা নিয়েও আলোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি বলেন, আর্জাতিক মানদন্ডের সাথে সংগতি বজায় রেখে বাংলাদেশে শ্রম আইন সংস্কার করা হবে, এটি অত্যন্ত প্রত্যাশিত। তিনি আইএলও এর গাইডলাইন অনুসরণ করে বাংলাদেশের শ্রম আইন ২০০৬-এর সংশোধনী করার পরামর্শ দেন।
এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান পোশাক শিল্পের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধিকে আশ্বস্ত করে বলেন, তার বোর্ড দায়িত্ব গ্রহনের পরপরই এ লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে তার বোর্ড শ্রম সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ৮১ টি শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে সংলাপ করেছে।
তিনি বলেন, বিজিএমইএ বাংলাদেশের শ্রম আইন ২০০৬-এর সংশোধনী নিয়ে সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে অব্যাহতভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এবং শিল্প ও কর্মসংস্থান সুরক্ষিত রাখতে দেশের বাস্তবতা, শিল্পের প্রেক্ষাপট, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা এবং বাস্তবায়ন যোগ্যতাকে গুরুত্ব দিয়ে সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনাক্রমে শ্রম আইন সংশোধনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।

দেশ ও শিল্পের ক্ষেত্রে যে ইতিবাচক পরিবর্তনগুলো ক্রমান্বয়ে সাধিত হচ্ছে, সেগুলোকে ইতিবাচকভাবে দেখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধিকে অনুরোধ জানান বিজিএমইএ সভাপতি।

সারাবাংলা/ইএইচটি/আরএস

বিজিএমইএ-ইউএসটিআর বৈঠক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর