ঢাকা: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মো. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, “যারা আপনার ঘোষিত ফেব্রুয়ারি নির্বাচনকে বানচাল করার হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তারা এখন প্রেস ক্লাব থেকে মাত্র ৫০০ ফুট দূরে, আপনার খুব কাছেই রয়েছে।”
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’ নামক একটি রাজনৈতিক সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এক জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ফারুক তার বক্তব্যে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আওয়ামী লীগের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মেয়ে বর্তমানে দিল্লিতে অবস্থান করছেন। একইসঙ্গে দেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিসাধনকারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও এখন দিল্লিতে। অথচ আজ যারা বাংলাদেশের মানুষকে হত্যা করে রক্তে রঞ্জিত করেছে, দেশকে অস্থিতিশীল করেছে—তাদের অধিকাংশকেই এখনো গ্রেফতার করা হয়নি।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “আজও সচিবালয়ে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা ঘোরাফেরা করছে। তারা এখনো বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত।”
নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থার কথা জানালেও, সাবেক এই চিফ হুইপ বলেন, “নির্বাচন কমিশন প্রধান ইতিমধ্যেই একটি গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছেন। কিন্তু যখন আমরা আপনার (ড. ইউনূস) ঘোষিত নির্বাচনের ট্রেনে উঠে বসেছি, নির্বাচনের ম্যাপ ঘোষণা হয়েছে, তখনই আওয়ামী প্রেতাত্মারা আবার সক্রিয় হয়েছে। তারা শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করে এই নির্বাচন বানচালের প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, “আপনারা যারা আন্দোলনে ছিলেন, হয়তো কিছুটা দূরত্ব থাকতে পারে। কিন্তু আজকে আমি আপনাদের অনুরোধ করবো—আপনারা দেশের মানুষকে ভালোবাসুন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করুন। হাসিনার মতো মিথ্যা কথা বলে নয়, বরং মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে আমাদের সরকারে যেতে হবে।”
বক্তব্যে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অবদানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “শহীদ জিয়া ও বেগম জিয়াকে দেশের মানুষ যেমন তাদের সততা ও আপোষহীন নেতৃত্বের জন্য ভালোবেসেছে, তেমনি গত ১৬ বছর ধরে তারেক রহমান যেভাবে দলের নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত রেখেছেন, তার জন্য মানুষ তাকেও ভালোবাসে।”
এই সময় ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’-এর সহ-সভাপতি আলহাজ্ব বাদল সরকার, সাধারণ সম্পাদক ইসমাঈল হোসেন সিরাজীসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে বক্তারা সরকারের নানা অনিয়ম, দমন-পীড়ন ও গণতন্ত্রহীনতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানান।