ঢাকা: ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা পুনরায় শুরু হওয়ার আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার কঠোর অবস্থান বজায় রেখেছে। মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক ভারতকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ভারত তার শুল্ক কমিয়ে না আনলে তাকে ‘কঠিন সময়ের’ মুখোমুখি হতে হবে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
অ্যাক্সিওসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লুটনিক হুমকি দিয়েছেন, যদি ভারত মার্কিন ভুট্টা কিনতে রাজি না হয়, তবে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশাধিকার হারাতে পারে।
লুটনিকের অভিযোগ করে বলেন, ‘ভারত-মার্কিন সম্পর্ক একতরফা। তারা আমাদের কাছে পণ্য বিক্রি করে, আমাদের সুবিধা নেয়। তারা তাদের অর্থনীতিতে আমাদের প্রবেশে বাধা দেয়। অথচ আমরা তাদের জন্য উন্মুক্ত। ১.৪ বিলিয়ন মানুষের দেশ হওয়া সত্ত্বেও তারা কেন এক বুশেলও মার্কিন ভুট্টা কিনবে না?’
ট্রাম্পের পক্ষ থেকে চাপ
লুটনিকের ভাষ্যমতে, ট্রাম্প ভারতকে বলেছেন, ‘তোমাদের শুল্ক কমাও, আমাদের সঙ্গে এমন আচরণ করো, যেমনটা আমরা তোমাদের সঙ্গে করি।’’
তিনি আরও জানান, ট্রাম্প প্রশাসনের লক্ষ্য হলো বছরের পর বছর ধরে চলে আসা অন্যায়কে ঠিক করা। এর জন্য প্রয়োজন হলে তারা শুল্ক আরোপ করবেন।‘
তিনি বলেন, ‘এটাই প্রেসিডেন্টের নীতি, এবং আপনি হয় এটি মেনে নিন, নয়তো বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তার সঙ্গে ব্যবসা করতে আপনার কঠিন সময় যাবে।’
ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করেছে, যার মধ্যে রাশিয়ার তেল কেনার জন্য ২৫ শতাংশ শুল্কও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই শুল্ক হার বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ। ট্রাম্প ও তার শীর্ষ কর্মকর্তারা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের সমালোচনা করছেন, যদিও ভারত এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তাদের জ্বালানি ক্রয় জাতীয় স্বার্থ এবং বাজারের গতিশীলতা দ্বারা পরিচালিত হয়।
ভারতের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপকে “অন্যায্য, অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য” বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
ভুট্টা বাণিজ্যের পেছনের কারণ
বিবিসি-র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন কৃষকরা এই বছর ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, যার প্রধান কারণ চীনের সঙ্গে বাণিজ্য উত্তেজনা। ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে মার্কিন ফসলের জন্য চীনের চাহিদা তীব্রভাবে কমে গেছে। এর ফলস্বরূপ, আমেরিকান কৃষকদের দেউলিয়া হওয়ার সংখ্যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ট্রাম্প প্রশাসন চীনের সাথে বাণিজ্য আলোচনা চালিয়ে গেলেও, একই সাথে তারা তাদের কৃষকদের জন্য ভারতে একটি নতুন বাজার তৈরি করতে চাইছে। উল্লেখ্য, এই কৃষকরা ট্রাম্পের বৃহত্তম ভোটব্যাংকগুলোর মধ্যে অন্যতম।