চট্টগ্রাম ব্যুরো: কোটি টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে নিজ দলের সাবেক নেত্রীর করা মামলাসহ তিনটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এর মধ্যে দুটি মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় রাষ্ট্রীয় আদেশে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগরের দ্বিতীয় অতিরিক্ত দায়রা জজ মো. আবদুর রহমান এ আদেশ দেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী শহীদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘তিনটি মামলা থেকে মেয়র মহোদয়কে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দুটি বিস্ফোরক আইনের মামলা। সেগুলো রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একটি চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলা থেকে তিনি অব্যাহতির আবেদন করেছিলেন। আদালত সেটা মঞ্জুর করেছেন।’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৯ মার্চ তৎকালীন নগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে নগরীর চকবাজার থানায় লুসি খান নামে এক নারী চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলাটি করেছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক মহিলাবিষয়ক সহ-সম্পাদক।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০২১ সালের ২০ মার্চ বাদীর মালিকানাধীন এনজিও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে প্রতিষ্ঠানের সচিব মহিউদ্দিন আহমদকে কৌশলে ডেকে নিয়ে অপহরণ করা হয়। মুক্তিপণ বাবদ এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। এর আগে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য বাদীর কাছে টাকা দাবি করেছিলেন শাহাদাত। টাকা না দেওয়ায় বাদীর কাছ থেকে চারটি খালি চেকও নেওয়া হয়।
চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় শাহাদাত হোসেনকে সেসময় গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ওই মামলায় তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর দিন ধার্য ছিল। আসামিদের আইনজীবীরা তাদের নির্দোষ দাবি করে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত মামলার তিন আসামির মধ্যে শাহাদাত হোসেন ও মোজাফফর আহমেদকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।
ফাতেমা জোহরা নামের এক নারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন বলে বেঞ্চ সহকারী শহীদুল জানিয়েছেন।
এদিকে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নাশকতার অভিযোগে নগরীর কোতোয়ালী থানায় বিস্ফোরক আইনে করা আরও দুই মামলায় অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে শাহাদাত হোসেনকে। ওই মামলায় তিনিসহ ৩৮ জন করে আসামি ছিলেন।
তিন মামলার ধার্য্য তারিখে মঙ্গলবার আদালতে হাজির ছিলেন সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন। অব্যাহতির আদেশের পর তিনি উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলার মাধ্যমে আমাকে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু আল্লাহর রহমত, আদালতের ন্যায়বিচার এবং আপনাদের দোয়া-ভালোবাসার কারণে আমি আজ অব্যাহতি পেলাম। সত্যকে কখনোই চাপা দেওয়া যায় না। আমি জনগণের কল্যাণ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে আজীবন অবিচল থাকব। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বিএনপি ফের জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে যাবে।’