ঢাকা: জাপানে জনশক্তি পাঠাতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জাপান সেল বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় জানায়, গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত (উপদেষ্টা পদমর্যাদা) লুৎফে সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাপানে জনশক্তি পাঠানোর বিষয়ে তৃতীয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সিদ্ধান্তে বলা হয়, ‘জাপান সেল’র কার্যক্রম নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারির মাধ্যমে ফেসবুক পোস্ট (প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং জাপানস্থ রাষ্ট্রদূতের কোটেশনসহ) দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে, যা প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হবে। এমতাবস্থায়, উপর্যুক্ত সিদ্ধান্তের আলোকে জাপানে শ্রমবাজার সম্প্রাসরণে ‘জাপান সেল’র কার্যক্রম সংক্রান্ত তথ্যাবলি পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় জাপান শ্রমবাজার সম্পর্কিত ‘জাপান ডেস্ক’র কার্যক্রম বিষয়ে বলছে— জাপান বাংলাদেশের জন্য একটি সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার। জাপান টাইমস’র গত বছরের ৩০ মার্চ প্রতিবেদনে উল্লিখিত ২০৪০ সালের মধ্যে দেশটিতে কর্মক্ষম জনসংখ্যার ঘাটতি ১ কোটি ১০ লাখে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে জাপান বিভিন্ন ভিসা ক্যাটাগরির বিদেশি কর্মী নিয়োগের সম্ভাবনা রেখেছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অনুপ্রেরণায় জাপানে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিস্তৃতির সঙ্গে জাপানে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর জন্য ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কো-অপারেটিভ ফেডারেশন (এনবিসিসি), জাপান বাংলা ব্রিজ রিক্রুটিং এজেন্সি লিমিটেড (জেবিবিআরএ) এবং কাইকম ড্রিম স্ট্রিট বিডি কোম্পানি লিমিটেডের (কেডিএস) মধ্যে চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার পূর্ণাঙ্গ কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কো-অপারেটিভ ফেডারেশনের (এনবিসিসি) অধীনে নির্দিষ্ট দক্ষ কর্মী (এসএসডাব্লু) ক্যাটাগরিতে কর্মীদের জাপানে পাঠানো হবে। এ ক্ষেত্রে লক্ষ্যভিত্তিক কর্মীদের নির্ধারণ করা হয়েছে এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা নিতে পারে, যাতে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী প্রেরণ বৃদ্ধি করা যায় এবং ভবিষ্যতে দেশটির শ্রমবাজারের জন্য নানান প্রধান উদ্যোগের কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়। এ লক্ষ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ও জাপানের দূতাবাস, বিজনেস ওয়ার্ল্ডসহ বিভিন্ন দফতরের সহায়তায় জাপান ডেস্কের কার্যক্রম চালু হয়েছে।
‘জাপান ডেস্ক’র কার্যক্রমের মধ্যে যে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে-
ক. জাপানে বিদ্যমান শ্রমবাজারের চাহিদার অনুসন্ধান।
খ. জাপানে কর্মসংস্থানের সুযোগ চিহ্নিত ও প্রচার।
গ. কর্মীদের ভাষা প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল টেস্ট ও তথ্যসংগ্রহ।
ঘ. জাপান ও বিদেশের বিভিন্ন দফতর/প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় সাধন।
ঙ. প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সেন্টার (কিউসিএস-১৭) এর কার্যক্রম।
জাপান ডেস্কের কার্যক্রম বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমাদের জনশক্তি রফতানি লক্ষ্য হবে জনগণের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ ও দারিদ্র্য বিমোচন। জাপান ডেস্কের মাধ্যমে আমরা এই লক্ষ্য অর্জন করতে পারব বলে বিশ্বাস করি। বিশেষ করে জাপানি অফিসার জাপান ডেস্কে কাজ করলে আরও কর্মসংস্থান সহজ হবে।’
জাপান ডেস্কের কার্যক্রম বিষয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জাপানি ভাষা পরীক্ষার সব ধাপের পরীক্ষা সম্পন্ন নিরীক্ষণ এবং সংখ্যার এর পরিবর্তে মান নিশ্চিত করতে জাপান সরকার ফোকাসড হতে চাইছে। এ জন্য জাপানি ভাষার প্রশিক্ষক কর্তৃক কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) প্রশিক্ষণার্থীদের মেকানিক্যাল জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণ এবং স্থানীয় কারিগরি প্রশিক্ষকদের শিক্ষকদের ব্যবস্থাও করতে হবে।’
এছাড়া, কাইকম ড্রিম স্ট্রিট বিডি কোং লিমিটেড (কেডিএস) এর মাধ্যমে দক্ষ নার্সিং সেবা প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে। কেডিএস’র সহযোগিতায় সিটিজি কেডিএস গ্রুপের আওতায় প্রশিক্ষণ প্রদান ও জাপানি ভাষা ও দক্ষতা অর্জন কার্যক্রমের মাধ্যমে মডেল ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তোলা হবে, যেখানে বাংলাদেশি কর্মীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে।
ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কো-অপারেটিভ ফেডারেশন (এনবিসিসি) এবং জাপান বাংলা ব্রিজ রিক্রুটিং এজেন্সি লিমিটেড (জেবিবিআরএ) যৌথভাবে বিস্তৃতির চুক্তির মাধ্যমে এসএসডাব্লু ক্যাটাগরিতে কর্মী নিয়োগ করবে।
জাপান ডেস্ক চালু হওয়ার পর যেসব কার্যক্রম গৃহীত হয়েছে তার মধ্যে আছে—
ক, জাপান সেলের নিজস্ব ওয়েবসাইট ([email protected]) এবং ফেসবুক পেইজ (জাপান সেল, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়) চালু করা হয়েছে। ওয়েবসাইট এবং ফেসবুকের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সম্পর্কিত তথ্যাদি ও ভাষাগত দক্ষতা, ভিসা, কাজ, বেতন ও অন্যান্য সুবিধাদি সম্পর্কে তথ্য শেয়ার করা হচ্ছে।
খ. যোগাযোগের জন্য বিশেষ ই-মেইল ([email protected]) চালু করা হয়েছে।
গ. জাপানের অর্গানাইজেশন ফর টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং (ওটিআইটি) এবং জাপান ফাউন্ডেশনের দুটি জাপানিজ ভাষা শিক্ষার অ্যাপস জাপান সেল-এর ফেসবুক পেইজে আপলোড করা হয়েছে।
ঘ. বাংলাদেশ থেকে জাপানে কর্মপ্রার্থীদের জাপানিজ ল্যাঙ্গুয়েজ স্টুডেন্টদের জন্য জাপানিজ লোনের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেছে।
ঙ. জাপানি ভাষা দক্ষতা পরীক্ষা পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত পরীক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রগুলো হলো- বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, আইইউবি (ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ), বিকেটিটিসি (বাংলাদেশ-কোরিয়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার), বিজিটিটিসি (বাংলাদেশ-জার্মান টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার), এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়।
চ. অনলাইন জাপান ভাষা প্রশিক্ষণ পরীক্ষামূলক কার্যক্রম ১৪ আগস্ট থেকে চালু করা হয়েছে। সব প্রার্থীর জাপানি ভাষা শিক্ষার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
ছ. জাপানি ভাষা ও স্কিল প্রশিক্ষণের জন্য জাপানের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী কার্যক্রম সীমিত করার জন্য ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট অথরিটিকে (এনএসডিএ) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জ. জাপানি ভাষা টেস্ট (জাপান ভাষা দক্ষতা পরীক্ষা-জেএলপিটি/জাপান ফাউন্ডেশন টেস্ট ফর বেসিক জাপানি-জেএফটি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ও শিক্ষার্থীদের তথ্য সংরক্ষণ একটি ডাটাবেজ তৈরির কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে ভবিষ্যতের নিয়োগকারীদের পূর্ণ তথ্য সহজেই পাওয়া যাবে এবং নিয়োগ কার্যক্রম আরও সহজ হবে।
ঝ. জাপানি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম বিদ্যালয় সমন্বয়কারী সমাধান করে এবং কার্যক্রম অধিকতর মানসম্মত করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠান
জাপানি ইউনিভার্সিটিজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (জেইউএএবি), অ্যাসোসিয়েশন অফ জাপানি ল্যাঙ্গুয়েজ ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব জাপানি ল্যাঙ্গুয়েজ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন, জাপানে বাংলাদেশ স্টুডেন্টস সাপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএসএ)।
ঞ. জাপানি ভাষা শিক্ষা প্রশিক্ষকগণের বেতন ভাতা প্রতি ঘণ্টা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে মাসিক ভাতা করা হয়েছে। অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিক্ষকদের উচ্চতর মার্কেটে কর্মী নিয়োগের জন্য ভাষা প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
ট. জাপানি ভিসার জন্য আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে ভিসা ফ্যাসিলিটেশন সার্ভিসেসের (ভিএফএস) বিদ্যমান সমস্যা নিরসন করা হয়েছে।
ঠ. জাপানের সহায়তায় জাপানি ভাষা ও স্কিল প্রশিক্ষণের জন্য ‘১ লাখ বাংলাদেশি প্রত্যাশী অভিবাসীকে জাপানি ভাষাসহ নির্দিষ্ট দক্ষ কর্মীর (এসএসডব্লিউ) অধীনে প্রশিক্ষণ প্রদান’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রণয়ন করে গত ২ জুলাই ইকোনমিক রিলেশনস ডিভিশন (ইআরডি)-এ পাঠানো হয়েছে।
বর্তমানে স্পেসিফায়েড স্কিল্ড ওয়ার্কারের ১৬টি সেক্টরের মধ্যে ছয়টি সেক্টর যেমন- কৃষি, নির্মাণ শিল্প, যত্ন কর্মী, বিল্ডিং পরিষ্কার ব্যবস্থাপনা, অটোমোবাইল পরিবহণ ব্যবসায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এসএসডব্লিউ’র সম্পূর্ণ সেক্টরের অধীনে ১৬টি সেক্টরে কর্মী নিয়োগ করার জন্য আলোচনা হয়েছে, যা জাপানের বাংলাদেশি দূতাবাস পরামর্শ করছে।
টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং প্রোগ্রামের (টিআইটিপি) পরিবর্তে ২০২৭ সাল থেকে দক্ষতা উন্নয়নের জন্য কর্মসংস্থান (ইএসডি) শুরু করতে যাচ্ছে। জাপান দূতাবাস কর্তৃক ইএসডি সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশি দূতাবাসে পাঠানো হবে।
জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণ
ক. বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৩৬টি কলেজের এন৫ লেভেলের জাপানিজ ভাষা প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালিত হচ্ছে, যার মধ্যে ১৬টি কলেজে এন ৪ লেভেলের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। জাপান ফাউন্ডেশন থেকে একজন ভাষা প্রশিক্ষক আগামী অক্টোবরে বাংলাদেশে পাঠাবে। তিনি বাংলাদেশি জাপানিজ ভাষা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেবেন।
খ. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে জাপান ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড অ্যান্ড এশিয়ান স্টাডিজ ডিপার্টমেন্ট, ব্যাংক বিশ্ববিদ্যালয়, জাপানি ইউনিভার্সিটিজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (জেইউএএবি) এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান (প্রায় দুই শতাধিক) জাপানিজ ভাষা প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। জাপান ফাউন্ডেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ভাষা প্রশিক্ষক পাঠানোর কথা জানিয়েছে।
জাপানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নতুন অঙ্গীকার ও নতুন সংযোগ
ক. জাপানের নিয়োগকর্তা এবং বাংলাদেশি সেন্ডিং অর্গানাইজেশনগুলোর মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনের অনুষ্ঠান আগামী ৪ ও ৭ নভেম্বর জাপানের টোকিও এবং নাগোইয়াতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছেল। ফলে বাংলাদেশ থেকে জাপানে কর্মী নিয়োগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।
খ. জাপানি ভাষার আইসিটি প্রশিক্ষণ উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে।
গ. অনলাইন ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোর জন্য একটি এলএমএস (লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) তৈরির লক্ষ্যে বিএমইটি একটি সফটওয়্যার রিকোয়ারমেন্ট স্পেসিফিকেশন (এসআরএস) তৈরি করছে।