Thursday 18 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাজাপ্রাপ্ত সাবেক বিএনপি নেতাকে হাজতে ‘বিশেষ সেবা’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:১১

হাজতে বিএনপির সাবেক সভাপতি লিটন হাওলাদার।

শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে একটি মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিএনপির এক সাবেক নেতাকে গ্রেফতারের পর থানার ভেতরে বিশেষ সুবিধা দিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাকসুদ আলমের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়া ওই ব্যক্তির কাছ থেকে আর্থিক অনৈতিক সুবিধা নিয়ে হাজতের মধ্যেই ব্যারাক থেকে আনা খাট, তোষক ও বালিশের ভিআইপি বিছানা করে দেওয়ার পাশাপাশি মোবাইলে কথা বলারও সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে সিগারেট খাওয়ার পরিষেবাও।

এই ঘটনার বেশ কিছু ছবি বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের দায়বদ্ধতা ও নৈতিকতা নিয়ে দেখা দেয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বিজ্ঞাপন

গোসাইরহাট থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, একটি সিআর (২০১/২৪) মামলার এক বছর দুই মাস সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি লিটন হাওলাদার (৪৮)। ওই মামলায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে তাকে আটক করে থানায় নেন ওসি মাকসুদ আলম। তবে তাকে অন্যান্য আসামিদের থেকে আলাদাভাবে বিশেষ সুবিধা দিয়ে থানার একটি কক্ষে রাখা হয়। পরের দিন তাকে আদালতে পাঠানো হয়। এদিকে হাজতে বিশেষ সুবিধায় রাখা বেশ কিছু ছবি গণমাধ্যমের হাতে চলে আসে।

ছবিগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, লিটন হাওলাদার নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে থানার হাজতখানায় রাখা হয়েছে। সেখানে থাকা একটি খাটে তিনি আয়েশী ভঙ্গিতে সিগারেট হাতে নিয়ে বসে মোবাইলে কথা বলছেন। এমন অবস্থায় কোনো এক ব্যক্তি গোপনে তার ছবিগুলো মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধারণ করেন।

গোসাইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাকসুদ আলম বলেন, ‘অন্য একটি মামলায় জামিন পেয়ে আসামি লিটন হাওলাদার দেখা করার জন্য থানায় আসেন। তবে তিনি অন্য একটি মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি বলে তাকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় আসামি লিটন হাওলাদার নিজেকে অসুস্থ বলে দাবি করলে আমি তাকে হাজাতে থাকার কথা বলি।’

হাজতখানায় আসামির জন্য বিছানার ব্যবস্থা ও মোবাইলে কথা বলতে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা কে বা কারা করেছে আমার জানা নেই। কেউ এটা করে থাকলে অবশ্যই আমি খতিয়ে দেখব। তবে মানুষ ভুল ত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়। ভুল ত্রুটি আমারও হতে পারে। আর আমাদের হাজতখানার পাশেই প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রের একটি কক্ষ রয়েছে। যেখানে অসুস্থ রোগীদের বিশেষ প্রয়োজনে রাখা হয়।’

বিশেষ কোনো সুবিধা নিয়ে তিনি এমন কাজ করেছেন কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি প্রথমে ব্যাপারটি অস্বীকার করেন। তবে একপর্যায়ে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন ওসি।

এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) তানভীর হোসেন বলেন, ‘আসামি যদি অসুস্থ থাকে সেক্ষেত্রে তাকে হাসপাতালে রেখে পুলিশি তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়ার বিধান রয়েছে। তাছাড়া ভেতরে মোবাইলে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেওয়া অনুসন্ধান করে দেখা হবে। থানার ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্যদের সাথে কথা বলে কী ঘটনা ঘটেছে তা জানানো যাবে। আর ঘটনার সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সারাবাংলা/ইআ

জেল হাজতে বিএনপি নেতা বিশেষ সেবা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর