সুদানের দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশের শহরে এক মসজিদে ড্রোন হামলায় অন্তত ৭৮ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে ফজরের নামাজ চলাকালে এ হামলা হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় চিকিৎসক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। সংবাদমাধ্যম বিবিসির বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।
চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন এবং এখনো ধ্বংসস্তূপ থেকে মরদেহ উদ্ধারের কাজ চলছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ড্রোন হামলার ফলে নামাজরত অনেক মানুষ ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
হামলার জন্য আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-কে দায়ী করা হলেও, সংস্থাটি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো দায়িত্ব স্বীকার করেনি। দুই বছরের বেশি সময় ধরে আরএসএফ ও সেনাবাহিনী রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে।
এল-ফাশের দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর শেষ শক্তঘাঁটি, যেখানে তিন লাখেরও বেশি সাধারণ মানুষ আটকা পড়ে আছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আরএসএফ শহরটিকে ঘিরে ব্যাপক হামলা শুরু করেছে। স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণকারী ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব জানিয়েছে, আরএসএফ এরই মধ্যে শহরের পাশের আবু শৌক শরণার্থী শিবির ও জাতিসংঘের সাবেক একটি কম্পাউন্ডে প্রবেশ করেছে।
বিবিসির যাচাই করা ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রায় ৩০টি মরদেহ কাপড়ে মুড়ে মসজিদের পাশে রাখা হয়েছে। আরএসএফ দ্রুত সেনা সহায়তা না পেলে এল-ফাশের পুরোপুরি পতনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিশ্লষকদের মতে শহরটি পতিত হলে সুদানের পশ্চিমাঞ্চলে আরএসএফের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবে এবং দেশটি কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়বে। উত্তর ও পূর্বে থাকবে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ এবং পশ্চিমে আরএসএফের দখল।
জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, সুদানে সংঘাত ক্রমেই জাতিগত রূপ নিচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো আরএসএফ-এর বিরুদ্ধে অ-আরব সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত জাতিগত নিধনের অভিযোগ তুলেছে।