Saturday 20 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভিসার ফি বাড়াল ট্রাম্প, বিপাকে পড়তে পারে ভারতীয় কর্মীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:৪৪ | আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:০৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বশেষ প্রচেষ্টায় এইচ-১বি ভিসা আবেদনকারীদের জন্য এক লাখ ডলার ফি আরোপ করে একটি ঘোষণা সই করা হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ ফি আরোপের সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে পারে ভারতীয় প্রযুক্তি কর্মীরা। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাত দক্ষ কর্মীর জন্য মূলত ভারত ও চীনের ওপর নির্ভরশীল।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো নিশ্চিত করা যে যুক্তরাষ্ট্রে যাদের আনা হচ্ছে, তারা যেন আসলেই অত্যন্ত দক্ষ হন এবং আমেরিকান কর্মীদের প্রতিস্থাপন না করে। আমাদের কর্মী দরকার। আমাদের দারুণ কর্মী দরকার, এবং এটি প্রায় নিশ্চিত করে যে সেটাই ঘটতে চলেছে।

বিজ্ঞাপন

হোয়াইট হাউসের স্টাফ সেক্রেটারি উইল স্কার্ফ বলেন, ‘এইচ-১বি নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা প্রোগ্রামটি দেশের বর্তমান অভিবাসন ব্যবস্থার অন্যতম সবচেয়ে বেশি অপব্যবহার হওয়া ভিসা ব্যবস্থা। এই ঘোষণার মাধ্যমে এইচ-১বি আবেদনকারীদের স্পন্সর করার জন্য কোম্পানিগুলোর ফি এক লাখ ডলারে উন্নীত হবে। এটি নিশ্চিত করবে যে তারা যাদের আনছে, তারা আসলেই অত্যন্ত দক্ষ এবং আমেরিকান কর্মীদের দ্বারা প্রতিস্থাপনযোগ্য নন।’

এইচ-১বি ভিসা কী?

এইচ-১বি ভিসা হলো একটি অস্থায়ী মার্কিন ওয়ার্ক ভিসা, যা কোম্পানিগুলোকে বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন বিদেশি পেশাদারদের নিয়োগের সুযোগ দেয়। ১৯৯০ সালে এটি তৈরি করা হয়েছিল মূলত বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিতের মতো যে ক্ষেত্রগুলিতে কাজ খুঁজে পাওয়া কঠিন বলে মনে করা হয়, সেখানে স্নাতক বা তার বেশি ডিগ্রিধারী ব্যক্তিদের জন্য।

এই ভিসা প্রাথমিকভাবে তিন বছরের জন্য দেওয়া হয়, তবে সর্বোচ্চ ছয় বছর পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। যারা গ্রিন কার্ড পেয়েছেন, তাদের জন্য এটি অনির্দিষ্টকালের জন্য নবায়ন করা যেতে পারে।

আবেদনের জন্য, প্রার্থীদের ইউএসসিআইএস এর সঙ্গে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হয়, যার পরে লটারি পদ্ধতির মাধ্যমে আবেদনকারীদের নির্বাচন করা হয়।

একবার মঞ্জুর হলে, এই ভিসা নিশ্চিত করে যে কর্মীরা তাদের আমেরিকান সহকর্মীদের সমান বেতন এবং তুলনীয় কাজের পরিবেশ পাবেন।

ভারতীয়দের ওপর প্রভাব

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ভারতীয়রা এইচ-১বি ভিসাধারীদের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ। রয়টার্স-এর রিপোর্ট অনুসারে, গত বছর এইচ-১বি ভিসার সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী ছিল ভারত (অনুমোদিত সুবিধাভোগীদের ৭১ শতাংশ)। ১১ দশমিক ৭ শতাংশ নিয়ে চীন ছিল দ্বিতীয় স্থানে।

২০২৫ সালের প্রথমার্ধে, অ্যামাজন এবং তার ক্লাউড-কম্পিউটিং ইউনিট ১২ হাজারেরও বেশি এইচ-১বি ভিসা অনুমোদন হয়েছিল, অন্যদিকে মাইক্রোসফট এবং মেটা প্ল্যাটফর্মের প্রতিটির ৫ হাজারেরও বেশি অনুমোদন হয়েছিল।

তবে, ট্রাম্পের নতুন পরিবর্তনের কারণে, এই বিপুল পরিমাণ ফি যোগ হওয়ায় আমেরিকান ভিসা পেতে ভারতীয়দের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। যদিও ভারতীয়রা গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারে, তবে অপেক্ষার সময় সাধারণত দীর্ঘ হয়। এই সময়ে তাদের ভিসা বারবার নবায়ন করতে হবে এবং প্রতিবারই ৮৮ লাখ টাকারও বেশি ফি দিতে হতে পারে।

এ ছাড়াও, মার্কিন সরকার নাগরিকত্বের আবেদনকারীদের জন্য আরও কঠিন পরীক্ষা চালু করছে—যা ট্রাম্প তার ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন চালু করেছিলেন, কিন্তু জো বাইডেন প্রশাসন বাতিল করে দিয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, আবেদনকারীদের মার্কিন ইতিহাস ও রাজনীতি সম্পর্কিত ১২৮টি প্রশ্ন অধ্যয়ন করতে হবে এবং মৌখিকভাবে ২০টি প্রশ্নের মধ্যে ১২টির সঠিক উত্তর দিতে হবে।

ট্রাম্পের ‘গোল্ড কার্ড’ ভিসা প্রোগ্রাম

ট্রাম্প ‘গোল্ড কার্ড’ ভিসা প্রোগ্রামের জন্য একটি নির্বাহী আদেশও সই করেছেন, যেখানে ব্যক্তির জন্য ১ মিলিয়ন ডলার এবং ব্যবসার জন্য ২ মিলিয়ন ডলার ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। রিপাবলিকান এই নেতা বলেন, ‘আমরা মনে করি এটি খুবই সফল হবে… এটি বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করবে, যা ট্যাক্স কমাবে, ঋণ পরিশোধ করবে এবং অন্যান্য ভালো কাজ করবে।’

মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, ‘গোল্ড কার্ড’ পরিকল্পনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র কেবল খুব উপরে থাকা অসাধারণ ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে আসার অনুমতি দেবে, যারা আমেরিকানদের জন্য ব্যবসা ও চাকরির সৃষ্টি করতে পারেন।

সারাবাংলা/এইচআই

ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত ভিসা যুক্তরাষ্ট্র

বিজ্ঞাপন

কুষ্টিয়ায় বজ্রপাতে ২ জনের মৃত্যু
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:৫৫

আরো

সম্পর্কিত খবর