Saturday 20 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রিজার্ভের সাড়ে ৮৫ শতাংশ বৈদেশিক ঋণ
এক বছরে সরকারের বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে ৯১৬ কোটি ডলার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:৪৬ | আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:৪৩

ঢাকা: এক বছরের ব্যবধানে সরকারের বৈদেশিক ঋণ ৯১৬ কোটি ৪১ লাখ ডলার বেড়েছে। বাংলাদেশি টাকায় বর্তমানে এর পরিমাণ হচ্ছে  প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে বা চলতি পঞ্জিকা বছরের গত জুন শেষে সরকারের মোট পুঞ্জিভূত বৈদেশিক ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২৩৭ কোটি ৮১ লাখ ৪০ হাজার ডলার (জিডিপি’র ২০ শতাংশ)। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে এর পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৩২১ কোটি ৪০ লাখ ৬০ হাজার ডলার (জিডিপি’র ১৮ দশমিক ১ শতাংশ)। জিডিপি’র হিসাবে বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে প্রায় ২ শতাংশ। এ হিসাব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।

একইসঙ্গে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের পরিমাণও বেড়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল ৬০৪ দশমিক ৮৭ ডলার। ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৪৮ দশমিক ৮৭ ডলার।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব মতে, গত জুন শেষে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভের প্রায় সাড়ে ৮৫ শতাংশ ছিল বৈদেশিক ঋণ। এর মধ্যে সরকারের ঋণের পরিমাণ ৮২ দশমিক ৪ শতাংশ এবং বেসরকারি খাতের ঋণের পরিমাণ ২ দশমিক ৯ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, সরকারের পুঞ্জিভূত মোট বৈদেশিক ঋণের মধ্যে ৮ হাজার ১৯ কোটি ৬৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার হচ্ছে সাধারণ ঋণ। এ ঋণের পুরোটাই দীর্ঘ মেয়াদি। এর মধ্যে সরকার সরাসরি নিয়েছে ৭ হাজার ৯৫৩ কোটি ৫২ লাখ ৩০ হাজার ডলার এবং বন্ডের মাধ্যমে সংগ্রহ করেছে ৬৬ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার ডলার।

অবশিষ্ট ১ হাজার ২১৮ কোটি ১৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার ঋণ হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের। এসব ঋণের মধ্যে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি উভয় ধরণের ঋণই রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, স্বল্প মেয়াদি ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৩২৬ কোটি ৩১ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০২ কোটি ৩৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার, রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ৪৬ কোটি ৮৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ৭৭ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার ডলার ঋণ রয়েছে।

অন্যদিকে, প্রাতিষ্ঠানিক দীর্ঘ মেয়াদী ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৮৯১ কোটি ৮৬ লাখ ১০ হাজার ডলার। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৩৫৪ কোটি ৬২ লাখ ডলার এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ৫৩৭ কোটি ২৪ লাখ ১০ হাজার ডলার ঋণ রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কোনো দীর্ঘ মেয়াদি বৈদেশিক ঋণ নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, সরকারের বৈদেশিক ঋণ ছাড়া দেশের বেসরকারি খাতেও বৈদেশিক ঋণ রয়েছে। চলতি পঞ্জিকা বছরের গত জুন শেষে এর পুঞ্জিভূত স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৭৭ কোটি ৮২ লাখ ২০ হাজার ডলার (জিডিপি’র দশমিক ৭ শতাংশ)। গত ২০২৩ সালের জুন শেষে এর পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫৭ কোটি ৪৮ লাখ ২০ হাজার ডলার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণ কমেছে ৭৯ কোটি ৬৬ লাখ ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্বল্প মেয়াদী ঋণের পরিমাণ-ই অধিক। গত জুন শেষে স্বল্প মেয়াদী এ ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ হাজার ৬ কোটি ১৯ লাখ ২০ হাজার ডলার। অন্যদিকে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণের স্থিতি হচ্ছে ৯৭১ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার।

স্বল্প মেয়াদী ব্যবসা ঋণের মধ্যে বায়ার্স ক্রেডিট খাতে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৫২৫ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ডলার, ডেফার্ড পেমেন্ট খাতে ৬৫ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, বিদেশি ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি’র বিপরীতে ১১৭ কোটি ১৬ লাখ ৯০ হাজার ডলার ঋণ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট-এর মাধ্যমে ১৪১ কোটি ৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার ঋণ গ্রহণ এবং বিভিন্ন স্বল্প মেয়াদী দায় রয়েছে প্রায় ৮০ কোটি ৮০ লাখ ৪০ হাজার ডলার।

অন্যদিকে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণের মধ্যে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো মোট ৮৯ কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার ঋণ নিয়েছে (এর মধ্যে ৮২ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার ডলার নেওয়া হয়েছে অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট-এর মাধ্যমে)। এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ৮৮১ কোটি ৪৭ লাখ ২০ হাজার ডলার (এর মধ্যে ব্যবসা সংক্রান্ত ঋণ ২২ কোটি ৭২ লাখ ৮০ হাজার ডলার) এবং নন-ব্যাংক ডেপজিটরি কর্পোরেশনগুলোর ঋণ স্থিতি হচ্ছে ৯১ লাখ ৩০ হাজার ডলার।

সারাবাংলা/আরএস

বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক ঋণ সরকারি ও বেসরকারি খাত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর