রাজশাহী: শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত স্থগিত ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদারের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতিতে রোববার জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে।
এর আগে, পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করে কিছু শিক্ষার্থী। এই কোটা বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে আমরণ অনশনে নামে ৭/৮ জন শিক্ষার্থী। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েন দু’জন। প্রশাসনের নির্বিকার অবস্থান মেনে নিতে না পেরে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল ইসলাম মাসউদ, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান ও জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদারসহ আরও অনেককে। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা তাদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়ান।
এতে আহত হন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, একজন উপ-রেজিস্ট্রার, রাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়ার শুভ ও সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মারসহ সাত/আটজন।
হাতাহাতির এক পর্যায়ে উপ-উপাচার্য জুবেরী ভবনের দ্বিতীয় তলায় চলে গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে ভবনের দ্বিতীয় তলার বারান্দায় অবরুদ্ধ করে রাখে। এরই মধ্যে সেখানে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদসহ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত হন। তখন জড়ো হতে থাকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বাম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা ও রাকসুর পদপ্রার্থীরা। এ সময় জুবেরী ভবনের ভেতরে স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। কিছু শিক্ষার্থী দোতলায় উঠে কয়েকটি ঘরের জানালাও ভাঙচুর করেন।
পরে রাত ১০টার দিকে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আলীম এক ঘোষণায় বলেন, ‘আগামীকাল শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন।’ এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ফুঁসে ওঠে শিক্ষার্থীরা। ১৭টি হল থেকে এক যোগে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ভিসির বাসভবনের সামনে আন্দোলন শুরু করেন। এর পর রাত ১টায় প্রশাসন থেকে পোষ্য কোটার ভর্তি কার্যক্রম স্থগিতে ঘোষণা দিতে বাধ্য হন।