ঢাকা: রিজার্ভ চুরির মামলায় আরসিবিসি ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার বাজেয়াপ্তের বিষয়ে বাংলাদেশের আদালতের দেওয়া রায় ফিলিপাইনের না মানার কোনো কারণ নাই বলে জানিয়েছেন সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিআইডি হেডকোয়ার্টার এর মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি
এ ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ কে কে জড়িত আছে- জানতে চাইলে ছিবগাত উল্লাহ বলেন, অনেকেরই নাম আমরা পেয়েছি। তবে তদন্তের স্বার্থে আমরা এখন প্রকাশ করতে পারছি না।
সিআইডি প্রধান বলেন, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে সাইবার জালিয়াতির মাধ্যমে চুরি হওয়া ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছে ঢাকার জেষ্ঠ্য বিশেষ জজ আদালত। ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংক ৮১ মিলিয়ন ডলার পাচারে জড়িত ছিল।
তিনি বলেন, সিআইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং প্রাপ্ত তথ্য ও আলামত, ফিলিপাইন সরকারের সরবরাহকৃত পারস্পরিক আইনি সহায়তা অনুরোধ এর মাধ্যমে সংগৃহীত সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আদালত মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫), ধারা ১৭(২)(৭) এর আওতায় আরসিবিসি ব্যাংক থেকে ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেন।
তিনি আরও বলেন, আরসিবিসি এর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ও সিইও লরেঞ্জো ট্যান জুপিটার ব্রাঞ্চের ম্যানেজার মাইয়া সান্তোস ডিগুইতো এবং ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও জুপিটার ব্রাঞ্চের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা ৫টি ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে চুরি হওয়া অর্থ পাচারে সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
ছিবগাত উল্লাহ বলেন, ফিলিপাইনের আদালত ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরসিবিসি-এর ওপর বড় অঙ্কের জরিমানা আরোপ করেছে। ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি আরসিবিসি মাত্র ৬৮ হাজার মার্কিন ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকে ফেরত দিয়েছিল, যা তাদের পক্ষ থেকে অর্থ ফেরতের প্রথম পদক্ষেপ ছিল।
তিনি বলেন, আরসিবিসি থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া পুরো ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশ সরকারের কোষাগারে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ সংক্রান্ত আদেশ বাস্তবায়নের জন্য কপি বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হচ্ছে। জাতিসংঘের ইউএনটিওসি ফিলিপাইনের আইন এবং এফএটিএফ নির্দেশনার আলোকে বাংলাদেশ সরকার এখন ফিলিপাইন সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এই অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা করবে, যাতে বাজেয়াপ্তির আদেশ কার্যকর হয় এবং পাচার হওয়া অর্থ পুরোপুরি ফেরত আসে।