Sunday 21 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মব তৈরি করে সাংবাদিক হেনস্তার অভিযোগ, অভিযুক্তদের গ্রেফতার দাবি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:১৭ | আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:৪১

সাংবাদিক হেনস্তার অভিযোগে রংপুর সিটি করপোরেশনে বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত

রংপুর: খবর প্রকাশের জেরে রংপুরের এক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিককে মবের হাতে হেনস্তা করা হয়েছে। জুলাই যোদ্ধা পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তির নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের দল রোববার (২১ সেপ্টম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় কাচারিবাজার থেকে তাকে তুলে সিটি করপোরেশনে নিয়ে যায়। এর পর তাকে মারধর করে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় সিটি করপোরেশনের প্রশাসক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ভূমিকার অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদল একুশে টেলিভিশনের রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি এবং দৈনিক সংবাদের নিজস্ব প্রতিবেদক। তার অভিযোগ, ১৭ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংবাদে ‘রংপুরে জুলাই যোদ্ধাদের নামে অটোরিকশার লাইসেন্স, ৫ কোটি টাকা বাণিজ্যের পাঁয়তারা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পর স্থানীয় ব্যক্তি এনায়েত আলী রকির নেতৃত্বে মব তৈরি হয়। রকি ফোন করে তার অবস্থান জেনে দলবল নিয়ে কাচারিবাজারে আসেন এবং তাকে তুলে নিয়ে সিটি করপোরেশনে নিয়ে যান। সেখানে মুঠোফোন কেড়ে মারধর করা হয় এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমার কক্ষে ঢোকাতে চেষ্টা করে। সেইসঙ্গে তাকে ভুল স্বীকার করিয়ে খবর প্রত্যাহারে বাধ্য করার চেষ্টা হয়।

বিজ্ঞাপন

এনায়েত আলী রকি দাবি করেন, তিনি জুলাই আন্দোলনের রাজবন্দী সৈনিক। তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্মসংস্থানের সুব্যবস্থার জন্য সরকারি অর্থায়ন নিয়ে লেখালেখি করে জুলাই যোদ্ধাদের বিকৃত করার দরকার কি?’ সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘তাকে আপসে নিয়ে আসা হয়েছে, কোনো অসম্মান করা হয়নি।’

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা বলেন, ‘রিপোর্টের কারণে মাফ চাওয়ার জন্য সাংবাদিকদের নিয়ে আসার প্রশ্নই ওঠে না। এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ।’ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক শহীদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ঢাকায় মিটিংয়ে থাকায় পরে কথা বলতে চান।

ঘটনা জানাজানি হলে রংপুরের সাংবাদিকরা সিটি করপোরেশনে গিয়ে প্রতিবাদ করেন। তারা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। জড়িত ব্যক্তিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার এবং উম্মে ফাতিমার অপসারণের দাবি জানান।

রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরপিইউ) এবং রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি সাংবাদিকতার ওপর হামলা। ঘটনার প্রতিবাদে সাংবাদিকদরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন এবং আগামীকাল বেলা সাড়ে ১১টায় রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশের ঘোষণা দেন। এ সময় সকল সহকর্মীকে উপস্থিতি থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ‘সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনায় একজনকে শনাক্ত করেছি। সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে অন্যদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

সাংবাদিকরা জানান, সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদল অটোরিকশা লাইসেন্স বিতরণের অসঙ্গতি তুলে ধরে, যা স্থানীয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে, এমন হামলা সাংবাদিক স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলছে।

সারাবাংলা/পিটিএম/পিটিএম

টপ নিউজ মব তৈরি সাংবাদিক হেনস্তা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর