Sunday 21 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘গণঅধিকার পরিষদের কর্মকাণ্ড ভবিষ্যৎ ঐক্যে ফাটল ধরাবে’

ঢাবি করেস্পন্ডেন্ট
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:৫৪

ঢাবির মধুর ক্যান্টিনে বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্রসমাজের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্রসমাজের দুই নেতাকর্মীকে আসামি করে রমনা থানায় মামলা করেছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক আখতারুজ্জামান সম্রাট। কিন্তু কোনো ধরনের তথ্যপ্রমাণ ও যাচাই-বাছাই ছাড়াই মামলা করা হয়েছে দাবি করে বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্রসমাজের আহবায়ক সাইফুল ইসলাম বলেছেন, গণঅধিকার পরিষদের এমন কর্মকাণ্ড আমাদের ভবিষ্যৎ ঐক্যে ফাটল ধরাবে।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় ছাত্রসমাজের আহবায়ক সাইফুল ইসলাম। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ভিপি নুরুল হক নুরসহ সংগঠনটির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র সমাজ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। পরবর্তী সময়ে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নেতৃত্বে জাতীয় ছাত্র-সমাজের নেতাকর্মীরা একাধিকবার হাসপাতালে গিয়ে ভিপি নুরুল হক নুরসহ আহত নেতাকর্মীদের শারীরিক খোঁজ-খবর নেন।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ওই হামলাকে কেন্দ্র করে রমনা থানায় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আখতারুজ্জামান সম্রাট বাদী হয়ে একটি এজহার দায়ের করেন। সেই এজহারে জাতীয় পার্টির বিভিন্ন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তবে কোনো তথ্য-প্রমাণ যাচাই-বাছাই ছাড়াই মামলায় ৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র সমাজ ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি মশিউর রহমান জিসানকে এবং ১১ নম্বর আসামি করা হয়েছে একই শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক তাসনিম বিন আজিজকে। আমরা বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদ ও ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়েছেন যে, মামলার বিষয়ে তারা অবগত নন এবং বিষয়টি বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’

সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা চেয়েছিলাম, রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে একটি ঐক্য থাকবে। ফ্যাসিবাদী শক্তি এবং তাদের দোসরদের বাদ দিয়ে যারা মূলত গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে শক্তি ছিল, আমরা সবসময় রাষ্ট্র ও সার্বভৌমত্বের স্বার্থে ঐক্য ধরে রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। সেই ধারাবাহিকতা এখনো অব্যাহত রয়েছে এবং সে ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট আন্তরিক। কিন্তু গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে যখন এ ধরনের ঘটনা ঘটে তখন আমরা ব্যথিত হই এবং মর্মাহত হই। বিশেষ করে যারা সবসময় রাজপথে স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে গেছে এবং গণঅভ্যুত্থানে সুস্পষ্ট ভূমিকা রেখেছে, তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড আমাদের কষ্ট দেয়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগের পর ভেবেছিলাম, তারা একটি সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেবে। কিন্তু এখনো কোনো ব্যাখ্যা পাইনি। নুরুল হক নূর আমাদের জানিয়েছিলেন যে, তিনি নাম প্রত্যাহার করবেন। কিন্তু, এখন পর্যন্ত তারা ভুল স্বীকার করেননি কিংবা নাম প্রত্যাহার করেননি। আমরা আশা করেছিলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদ একটি অফিসিয়াল প্রেস ব্রিফিং অথবা প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অন্তত ভুলটি স্বীকার করবে। কিন্তু প্রায় তিন দিন অতিক্রান্ত হলেও কোনো ব্যাখ্যা না পেয়ে আমরা মনে করছি, এটি জাতির সামনে খোলাসা করা দরকার।’ গণঅধিকার পরিষদ তথা ছাত্র অধিকার পরিষদের এমন কর্মকাণ্ড ভবিষ্যতের ঐক্যে ফাটল ধরাবে বলে আশঙ্কা তিনি।

মামলার ছয় নম্বর আসামি মশিউর রহমান জিসান বলেন, ‘নুরুল হক নুরের ওপর হামলার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সভাপতি ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থর নির্দেশনায় আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ঠিক সেই মামলাতেই আমাকে আসামি করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৮ সালের পর থেকে আমরা একসাথে আন্দোলন করেছি, সংগ্রাম করেছি, বিশেষ করে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে একসঙ্গে ছিলাম। ছাত্র অধিকার পরিষদের সঙ্গেও আমাদের সম্পর্ক ভালো ছিল। কিন্তু গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে এই মিথ্যা মামলার শিকার হওয়া আমাদের জন্য লজ্জাজনক। রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক জীবনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

সারাবাংলা/কেকে/পিটিএম

ঐক্যে ফাটল কর্মকাণ্ড গণঅধিকার পরিষদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর