Tuesday 23 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘খেলনা শিল্পে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড গড়ে তুলতে হবে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:২৫ | আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:৪২

ডিসিসিআই আয়োজিত খেলনা উৎপাদন শিল্প বিষয়ক ফোকাস গ্রুপ আলোচনা।

ঢাকা: দেশের খেলনা শিল্পে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর খেলনা রফতানি হলেও এখনো এই শিল্প আমদানি নির্ভর। সেজন্য দেশের খেলনা শিল্পের বহুমুখীকরণ ও নতুন উদ্ভাবন ঘটাতে হবে। আনতে হবে প্রযুক্তির ছোঁয়া।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কর্মাস ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘রফতানি বহুমুখীকরণ: খেলনা উৎপাদন শিল্পে উদ্ভাবন ও রফতানির সম্ভাবনা’ শীর্ষক ফোকাস গ্রুপ আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ খেলনা শিল্প রফতানিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। এ শিল্পকে পৃষ্ঠপোষকতা দিলে তা দেশের রফতানি বৈচিত্র্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বিজ্ঞাপন

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ এরই মধ্যেই ৮৮টি দেশে প্রায় ৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের খেলনা রফতানি করছে। বর্তমানে ১৪৭টির বেশি কারখানা এ খাতে জড়িত, যেখানে প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই নারী। স্থানীয়ভাবে খেলনা শিল্পে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক খেলনা বাজার ২০২৩ সালে ১০২ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ২০৩২ সালে ১৫০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। চীন ধীরে ধীরে কম খরচের খেলনা উৎপাদন থেকে সরে আসছে, ফলে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

আলোচনা সভা।

তবে এ শিল্পকে টেকসইভাবে এগিয়ে নিতে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে কাঁচামালের উচ্চ শুল্ক, আমদানি-নির্ভর প্যাকেজিং, জটিল বিধিনিষেধ এবং লাইসেন্সকৃত খেলনা বাজারে সীমিত প্রবেশাধিকার।

এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে স্থানীয় পরীক্ষাগার স্থাপন, ডিজাইন ট্রেনিং, বিশ্ববিদ্যালয় ও টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের সহায়তা, পরিবেশবান্ধব উৎপাদন এবং নতুন বাজারে প্রবেশের জন্য দূতাবাস ও বাণিজ্য মিশনের উদ্যোগের ওপর জোর দেন সভাপতি তাসকীন আহমেদ।

আলোচনায় পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, এনবিআরের সদস্য মুহাম্মদ মুবিনুল কবীর এবং বাংলাদেশস্থ বৃটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর মার্টিন ডওসন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফেকচেরাস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ) সভাপতি শামীম আহমেদ।

এসিআই পিএলসির প্রেমিয়াফ্লেক্স প্লাস্টিক লিমিটেড এর ডেপুটি এক্সিকউটিভ ডিরেক্টর আনিসুর রহমান বলেন, ‘বিশ্বর সব দেশেই খেলনা দিয়ে শিশুরা শেখে। কিন্তু আমাদের দেশে ভালো খেলনা বানাতে চাইলে দাম বেশি পড়ে যায়। ট্যারিফ বেশি। মোল্ডে কোয়ালিটি পরিপূর্ণ হচ্ছেনা। মধ্যবিত্তদের হাতের নাগালে ভালো খেলনা পৌছে দিতে হবে।’

কাপকেক এক্সপোর্টস লিমিটেড এর সিইও ও এমডি ইয়াসির ওবায়েদ বলেন, ‘আমাদের কোন সংগঠন নেই। খেলনায় এখনো আমদানি নির্ভর। আমাদের কথা আমরা সব সময় তুলে ধরতে পারিনা।’

গোল্ডেন সন লিমিটেড এর এমডি বেলাল আহমেদ বলেন, ‘খেলনা একটি বহুমুখীকরণ পণ্য। আমাদের উৎপাদিত সব খেলনাই আমরা রফতানি করি। বন্ড লাইসেন্স ফর প্লাস্টিক টয়- এখনো এর জন্যে কোন নীতিমালা নেই। ফেব্রিক বেইজড দ্বিতীয় খেলনার কারখানা গড়ে তুলেছি। সেখানে কোন সমস্যা নেই। গার্মেন্টস বেইজড খেলনা শিল্পে কোন সমস্যায় পড়তে হয়না। কিন্তু প্লাস্টিক বেইজড খেলনা শিল্প গড়তে বিপাকে পড়তে হয়। সঠিক নীতিমালা নেই।

পরিবেশ অধিদফতরের উপ পরিচালক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্লাস্টিক লেদারের পরই খেলনা সেক্টরের অবস্থান। প্লাস্টিককে আমরা গ্রিন ক্যাটাগরিতে নিয়ে এসেছি। পরিবেশবান্ধব শিল্পে পরিণত করতে প্লাস্টিককে ‘টক্সিক ক্যামিকেল ফ্রি’ রাখতে হবে। ওয়েস্ট ম্যানেজম্যান্ট সিস্টেমও সহজ করতে হবে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এনজে

খেলনা শিল্প ডিসিসিআই

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর