মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার হত্যা মামলায় সাত আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, লাশ গুম করার অপরাধে আরেক ধারায় প্রত্যেক আসামিকে সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে মুন্সীগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন উর্মি এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় একমাত্র নারী আসামি আলেয়া বেগম ওরফে আলো বেগম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় শেষে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। অন্য ছয় আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— সদর উপজেলার চরবেশনাল গ্রামের মৃত ওয়ালিদ বেপারীর স্ত্রী আলেয়া বেগম (৩৫), একই গ্রামের মৃত মোসলেম আখনের ছেলে আতু ওরফে হাতু (৪৫), টঙ্গীবাড়ি উপজেলার পুরা গ্রামের জয়নুদ্দিন ঢালীর ছেলে মোহাম্মদ হোসেন (২৯), চরবেশনাল গ্রামের সবদু খন্দকারের ছেলে আলামিন খন্দকার (৩৩), জুলহাস আখনের ছেলে শহর আলী (২২), তোতা আখনের ছেলে শহিদ আখন (৩৫) এবং খোরশেদ দেওয়ানের ছেলে চাঁন মিয়া দেওয়ান (২০)।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর সদর উপজেলার আকালমেঘ পলাশপুর গ্রামের আমজাদ বেপারীর ছেলে ওয়ালিদ বেপারী (৩৮) শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন। ছয় দিন পর ৬ ডিসেম্বর বিকেলে দক্ষিণ চরবেশনাল এলাকার একটি ডোবার পাশে কচুরিপানার ভেতর থেকে পচাগলা লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে পরিবার লাশটি ওয়ালিদ বেপারীর বলে সনাক্ত করে।
এ ঘটনায় নিহতের মা হাফেজা খাতুন বাদী হয়ে মুন্সীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে আসামি মোহাম্মদ হোসেনকে গ্রেফতার করলে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর অন্য আসামিদেরও গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়।
নয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আদালত হত্যার দায়ে সাত আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ অন্য ধারায় সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সন্তুষ্ট।’