কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি সংগঠন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (সর্বহারা পার্টি) পরিচয় দিয়ে কয়েকজন সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষকের কাছে চাঁদা দাবি করার অভেযোগ উঠেছে। পরিবার ও নিজেদের ক্ষতির হুমকি পেয়ে এরমধ্যেই দুইজন শিক্ষক বিকাশে টাকা পাঠায়েছেন। এই বিষয়টি নিয়ে জেলায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এই ঘটনায় ভুক্তিভোগি মিরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জয়শ্রী হালদার জানান, শনিবার সকাল ১০টা ৩২ মিনিটে একটি নম্বর থেকে ফোন আসে। ফোনে এক ব্যক্তি নিজেকে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য বলে দাবি করেন। এরপর তার নেতা আট জেলার প্রধানের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। ওই ব্যক্তি চাঁদা দাবি করেন এবং না দিলে পরিবারের ক্ষতি হবে বলে হুমকি দেন।
একই নম্বর থেকে ফোন আসে স্থানীয় মিরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিভাস কুমার পালের কাছে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ছাতিয়ান আব্দুর রাফেত বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক গোপাল দেবনাথের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে কথা বলছিলাম। ঠিক তখন তার কাছেও ফোন আসে। নম্বরটি একই হওয়ায় তিনি আর ফোন ধরেননি। এর আগে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাগরখালী আদর্শ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক উত্তম দেবনাথের কাছেও চাঁদা দাবি করা হয়। তিনিও নিরাপত্তার কথা ভেবে রাত ৮টার দিকে তাদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠিয়েছেন। থানায় এ ব্যাপারে এখনো কোন অভিযোগ দিইনি। তবে সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।
কুষ্টিয়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জয়দেব বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি তিনি প্রশাসনের কাছে জানিয়েছে এবং আশপাশে এমন একটি চক্র সক্রিয় বলে ধারণা করছেন।
মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোমিনুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত থানায় আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তিনি সবাইকে চাঁদার দাবিকে অগ্রাহ্য করে দ্রুত অভিযোগ করার অনুরোধ করেছেন।
র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুদীপ্ত সরকার জানান, কল-লিস্টে ওই নম্বরগুলোর লোকেশন মাদারীপুর জেলা দেখাচ্ছে। র্যাব বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে এবং সাধারন মানুষকে হতাশ ও বিচলিত না হয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে বলেছে।