রংপুর: বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) রংপুর মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতির সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। সংগঠনের আদর্শ ও স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার রাত পৌনে ১০টায় বাগছাসের কেন্দ্রীয় সংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার ও সদস্য সচিব জাহিদ আহসান এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। এছাড়া, অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তবে সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরীর হারাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় ফেল করা প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থীকে বাঁশের লাঠি দিয়ে মারধরের অভিযোগেই কমিটি স্থগিতাদেশ ও তদন্ত কমিটি করেছে বাগছাস কেন্দ্রীয় সংসদ। এর আগে, গতকাল সারাবাংলায় ‘গণহারে শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ বাগছাস নেতার বিরুদ্ধে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। তবে কমিটি স্থগিতের বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের আদর্শ ও স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উল্লেখ করে বাগছাসের গঠনতন্ত্রের ধারা ৬.৪.১ অনুযায়ী ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতির সদস্যপদ স্থগিত করা হয়।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- আবু তৌহিদ মোঃ সিয়াম (সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক), নাঈম আবেদীন (সিনিয়র সংগঠক), মোহাম্মদ আরশাদ হোসাইন (সদস্য)। কমিটিকে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নিরপেক্ষ তদন্ত প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় সংসদের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশে মাহফুজুর রহমান, যুগ্ম সদস্য সচিব (দফতর), এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, গত ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে হারাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি বিদ্যালয়ে গিয়ে অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির ক্লাসে ঢুকে ফেল করা শিক্ষার্থীদের বাঁশের লাঠি দিয়ে মারধর করেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, এ সময় কোনো শিক্ষক তাকে বাধা দেননি।
ঘটনার দুদিন পর অভিভাবক ও এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষকের কাছে বিচার দাবি করেন। দুই শিক্ষার্থীর বড় ভাই পরশুরাম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করেন। তবে প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ইমতিয়াজ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় উৎসাহ দিয়েছেন। বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে।
ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি মারধরের বিষয়ে গতকাল বলেন, ‘একটু শাসন করেছি। ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর কোনো অভিযোগ নেই। কিছু ব্যক্তি ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করেছে। বিষয়টি মীমাংসিত হয়েছে।’ রংপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল হাই জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শারীরিক নির্যাতন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আমাকে এ বিষয়ে জানানো হয়নি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি একজন শিক্ষার্থী হয়ে কীভাবে স্কুল সভাপতি হলেন তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে সমালোচনা। জানা গেছে, ইমতি ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাবে) এখনো পড়াশোনা করছেন। অভিযোগ রয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক (সাবেক) ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) রংপুর মহানগর শাখার আহ্বায়ক হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদ বাগিয়েছেন ইমতিয়াজ আহমদ ইমতি।