গোবিপ্রবি: জুলাই গণহত্যার সমর্থনকারী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলে ঢুকে ধর্ষণ করতে চাওয়া সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) বিজিই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইমদাদুল হক সোহাগকে পদন্নোতির পর শিক্ষা ছুটি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ইমদাদুল হক সোহাগের বিরুদ্ধে শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট থাকা অবস্থায় দাড়ি রাখলে হল থেকে বের করে দেওয়া এবং সাতক্ষীরা জামায়াতে ইসলামীর এলাকা বলে শিক্ষার্থীকে শূন্য মার্ক দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুধু তাই নয় – ‘ধর্ম ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারবে, কিন্তু সংস্কৃতি ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারবে না’-সহ বিভিন্ন উক্তির মাধ্যমে ধর্ম অবমাননারও অভিযোগ তুলেছে শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন) সহ-সভাপতি থাকাবস্থায় বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রীদের ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার কারণে সংবাদের শিরোনামও হন ইমদাদুল। এমনকি জুলাই গণহত্যা চলার সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নাম, পরিচয় ও ঠিকানা দিয়ে সহায়তার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে ফাইনান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদ নেতা মোহাম্মদ আলী ত্বহা বলেন,‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বিরোধিতাকারীদের দৃশ্যমান বিচার সব শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি ছিল। কিন্তু নানা ছলে-বলে ও কৌশলে বিচার বিলম্ব করে এড়িয়ে যেতে দেখছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। প্রতিটি বিভাগের চেয়ারম্যান, অনুষদের ডিনদের নিয়ে ৫৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে, কিন্তু বিচারের মিটিংগুলোতে অধিকাংশ শিক্ষকদের অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায়। বিচার বিলম্ব অথবা না করার উদ্দেশ্যেই এত দীর্ঘ কমিটি! বিচার বিলম্বের মাঝে শিক্ষক ইমদাদুল হক সোহাগ প্রমোশন পেয়েছেন এবং দেশের বাহিরেও চলে গেছেন। শিক্ষার্থীদের বিচার চাওয়া এবং বিচার চলমান সত্ত্বেও তাকে দেশের বাহিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার সম্পূর্ণ দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক বেলাল হোসাইন আরিয়ান বলেন, ‘গণহত্যার সমর্থক ও স্বৈরাচারের মুখপাত্র ইমদাদুল হক সোহাগকে শিক্ষা ছুটি দেওয়া শিক্ষাঙ্গণ এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা। ন্যায়-নীতি নয়, এখানে পুরস্কৃত হলো অপরাধ আর অমানবিকতা। বিশ্ববিদ্যালয় যদি ঘাতকদের প্রশ্রয় দেয়, তবে তা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে সরাসরি ষড়যন্ত্র। এ রকম সুযোগ-সুবিধা করে দেওয়ার বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার মো. এনামুজ্জামান বলেন, ‘শিক্ষা ছুটি আমাদের হাত থেকে গেলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত দেয়, তা বাস্তবায়ন করি।’
ছুটি দেওয়ার বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দীন শেখর বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে তো কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। যতক্ষণ একটা লোক অভিযুক্ত না হবে, ততক্ষণ তার সব অধিকার দেওয়া হবে।’