দিনাজপুর: দিনাজপুরের হাকিমপুর ডিগ্রি কলেজ। প্রতিষ্ঠার ৪১ বছর পেরিয়ে গেলেও কলেজটিতে চালু হয়নি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষা। ১৯৮৪ সালে যাত্রা শুরু এবং ২০১৮ সালে জাতীয়করণ হলেও আজও উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা। শুধু তাই নয়, নানা সমস্যায় জর্জরিত কলেজটিতে নেই অবকাঠামো উন্নয়ন। তাছাড়া, দীর্ঘদিন ধরে ভুগছে শিক্ষক সংকটে। এতে কলেজটির শিক্ষা ব্যবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে।
কলেজ তথ্য বলছে, কলেজটি জাতীয়করণ হওয়ার পর থেকে চাইলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারছেন না। ১ হাজার ১৭১জন শিক্ষার্থীর কলেজটিতে একজন উপাধ্যক্ষসহ ২০ জন শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এরমধ্যে ইংরেজি, অর্থনীতি, প্রাণী বিজ্ঞান, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, ইতিহাস এ পাঁচটি বিষয়ে দশজন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও একজন শিক্ষকও নেই এসব বিষয়ে। এছাড়াও দুইজনের জায়গায় একজন করে শিক্ষক রয়েছে রাষ্ট্র বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান, হিসাব বিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস, ভূগোল, মনোবিজ্ঞান, মার্কেটিং,গণিত ও রসায়নে বিভাগে। এসব বিভাগে প্রায় নয়জনের মতো শিক্ষক সংকট রয়েছে।
কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে হাকিমপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এনামুল হক বলেন, ‘আমি কিছু দিন হলো এ কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেছি। দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কলেজের পক্ষ থেকে শিক্ষকের চাহিদার কথা জানানো হচ্ছে। কিন্তু এখনো শিক্ষক না পাওয়ায় খণ্ডকালীন কিছু শিক্ষক দিয়ে পাঠদান চালানো হচ্ছে। যেহেতু শিক্ষক নেই সে কারণে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর চালু করা সুযোগ নেই। যখন সরকার পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ দিবে তখন এসব চালু করা হবে।’
হাকিমপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া সোনিয়া আক্তার বলেন, ‘আমাদের বেশিরভাগ বিষয়ের শিক্ষক নেই। কোনোদিন ক্লাস হয় আবার কোনো দিন হয় না। আমাদের প্রাইভেট বা কোচিংয়ের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। আমরা চাই আমাদের কলেজে দ্রুত শিক্ষক সংকট কাটিয়ে উঠুক।’
শিক্ষার্থীর অভিভাবক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চাইলেও আমাদের সন্তানকে হাকিমপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজে অনার্স কিংবা মাস্টার্সে পড়াতে পারি না। কারন এখানে এসব চালু নেই। আমরা চাই সরকার দ্রুত এসব চালু করে দিয়ে আমাদের সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ দিক।’
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী গোলাম রব্বানী এ বিষয়ে বলেন, ‘হিলিতে তেমন কলকারখানা না থাকায় সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ গুলো বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ। যার ফলে অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপের কারণে সন্তানদের উচ্চ শিক্ষার জন্য বাহিরে পাঠাতে পারে না। সরকার যদি হাকিমপুর ডিগ্রি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স চালু করে, তাহলে অল্প খরচে এখানকার সন্তানরা পড়াশোনার সুযোগ পাবে।’