ঢাকা: ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কমিশনকে ‘মব ভায়েলেন্স’ এর বিষয়ে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। সেইসঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে পরিণতি কী হয়, সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন তারা।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নির্বাচন ভবনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আয়োজিত সংলাপে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেন সমাজের প্রতিনিধি ও বুদ্ধিজীবীরা।
এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন। আমন্ত্রিত অতিথিরাও উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বুদ্ধিজীবীরা নাসির কমিশনকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সাহস দেখানোর পরামর্শ দিয়ে প্রয়োজনে পদত্যাগেরও আহ্বান জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌস জানান, জাতি হিসেবে অর্জন থাকার পরও দুর্ভাগা, ৫৪ বছরে ক্ষমতার ট্রানজিশন হবে ঠিক করতে পারে নি।
‘তিনজন সাবেক প্রধান বিচারপতির পরিণতি আপনারা দেখেছেন। সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পরিণতি আপনারা দেখেছেন। আইন শৃঙ্খলায় পুলিশের আস্থা নেই। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। এমন এক পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়েছেন- সিইসির ভাষায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ চ্যালেঞ্জে আছেন।’
কমিশনকে স্বাধীনভাবে মেরুদণ্ড সোজা করে নির্বাচন উপহার দেওয়ার আহ্বান করেন তিনি।
পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেটরি রিসার্চ সেন্টারের সিনিয়র ফেলো আব্দুল ওয়াজেদ জানান, অন্তবর্তীকালীন সরকারের আমলে ভালো নির্বাচনের প্রত্যাশা রয়েছে।
ভোটের সময় অভিযোগ সামাল দিতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পরিবর্তে ইসি কর্মকর্তাদের হিমশিম খেতে হবে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন এ শিক্ষক।
মব ভায়োলেন্স পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে বলে সতর্ক করেন আব্দুল ওয়াজেদ।
পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী বলেন, ‘সপ্তাহব্যাপী সারাদেশে মোটিভেশনাল প্রোগ্রাম নিলে, কোন জিনিস করা যাবে, কি করা যাবে না, সাহসের সঙ্গে কি করতে হবে, আমরা ভোট নির্ভয়ে ভোট দেব- কিছু শ্লোগান নিয়ে এগোলে উজ্জীবিত হবে।’
তিনি জানান, এখনও শঙ্কা মানুষের মধ্যে সুষ্ঠু ভোট হবে নাকি আগের মতো হবে, প্রচারে অংশ নিলে মানুষের মধ্যে শঙ্কা কেটে আসবে। রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আসছে, এটা মনে রাখতে হবে ইসির। হটকারী সিদ্ধান্ত নিলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।
সাবেক লেফট্যানেন্ট জেনারেল মাহফুজুর রহমান জানান, ভোটের আগে বাহিনীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে ভালো হবে। সেইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানিক ভিত্তি তৈরি করতে ইসিকে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে, যাতে অন্যরা অনুসরণ করতে পারে।
অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানউজ্জামান জানান, আস্থা অর্জনই প্রধান সমস্যা। এটা তৈরি করা ইসির প্রধান দায়িত্ব। আইনানুগভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইসিকে প্রমাণ করতে হবে, নিরপেক্ষ ভোট আয়োজন করতে হবে। ভুয়া তথ্য রোধে ইসিকে বড় ভূমিকা রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
শিক্ষার্থী প্রতিনিধি জায়িফ রহমান জানান, নির্বিঘ্নে ভোটের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ইসি দৃশ্যমান উদ্যোগ নিলে জনগণের মধ্যে ইসির প্রতি ভরসা বাড়বে। মিস ইনফরমেশন, এআই জেনারেটেড তথ্যের অপব্যবহার রোধে তৎপর থাকার অনুরোধ জানান তিনি।