জাতিসংঘ ইরানের ওপর অস্ত্র ও পারমাণবিক ইস্যুসহ অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেছে। তেহরান পারমাণবিক চুক্তি লঙ্ঘন করেছে অভিযোগ তুলে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি নিরাপত্তা পরিষদে এই প্রক্রিয়া শুরু করে।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ২০০৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে গৃহীত নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলো পুনরায় কার্যকর হয়েছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে।
ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা ইরানসহ সব রাষ্ট্রকে আহ্বান জানাই এই প্রস্তাবগুলো পূর্ণভাবে মেনে চলতে।’ ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া কাল্লাস নিশ্চিত করেছেন, ইউরোপও বিলম্ব না করে পারমাণবিক সংশ্লিষ্ট সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করবে।
ইসরায়েল নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালকে বড় পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘উদ্দেশ্য হলো পারমাণবিক অস্ত্রধারী ইরানকে ঠেকানো।’
অন্যদিকে ইরান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, নিষেধাজ্ঞার কঠোর জবাব দেওয়া হবে। তেহরান এরই মধ্যে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের পরামর্শের জন্য ডেকে পাঠিয়েছে। তবে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা করছে না।
রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালকে অবৈধ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জাতিসংঘ মহাসচিবকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘এই পদক্ষেপ একটি গুরুতর ভুল।’
ইউরোপীয় শক্তিগুলো ছয় মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা বিলম্বের প্রস্তাব দিয়েছিল, যদি ইরান জাতিসংঘের পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার দেয় এবং সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদের বিষয়ে উদ্বেগ নিরসন করে। তবে ইরান সে পথে যায়নি।
এদিকে নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কায় ইরানি মুদ্রা রিয়ালের দর রেকর্ড নিম্নে নেমেছে। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এক মার্কিন ডলারের বিপরীতে রিয়ালের মূল্য ১১ লাখ ২৩ হাজার যা শুক্রবারের ১০ লাখ ৮৫ হাজার থেকে আরও কমেছে।
নতুন নিষেধাজ্ঞায় ইরানের ওপর আবারও অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণে নিষেধাজ্ঞা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে। এছাড়া বহু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্পদ জব্দ, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং পারমাণবিক প্রযুক্তি-সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যে অংশ নেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।