ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামী কোনো স্বাধীন রাজনৈতিক দল নয়; তারা অন্য কোনো দেশের রাজনৈতিক সংগঠনের শাখা হিসেবে কাজ করে। তিনি দাবি করেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য দলটি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে।’
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর রমনা কালী মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন। এসময় তিনি পূজায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, উৎসব মানুষে মানুষে সৌহার্দ্যের বার্তা দেয়। ধর্ম ভিন্ন হলেও আমাদের জাতিসত্ত্বা এক—এই সত্যটাই বাংলাদেশের সৌন্দর্য।
রিজভী বলেন, জামায়াতে ইসলামী আগে তাদের নাম লিখত “জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ”। এতে বোঝা যায়, তারা মূল সংগঠন অন্য কোথাও, আর বাংলাদেশ শাখা হিসেবে এখানে কার্যক্রম চালায়। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমরা যেমন লিখি ‘জাতীয়তাবাদী দল কুষ্টিয়া জেলা শাখা’। একইভাবে জামায়াত নামের শেষে বাংলাদেশ বসিয়েছে। ওয়ান-ইলেভেনের সময়ে তারা নাম পালটে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ করে, পরে আবার লোগো পরিবর্তন করে। ২০১৬ সালে একবার পতাকার লোগো পালটানো হয়েছিল, এখন আবার নতুন লোগো পরিবর্তনের প্রস্তুতি চলছে। তিনি মন্তব্য করেন, এই ধরনের রূপান্তর মানুষ ভালোভাবে নেয় না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, পূজা শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব নয়, বরং সারাদেশের মানুষের উৎসব। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই মিলে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়। তিনি বলেন, ‘উৎসব কখনও বিভাজন সৃষ্টি করে না, বরং একে অপরকে কাছাকাছি আনে।’ তিনি আরও জানান, পূজার নিরাপত্তায় মুসলমানরাও কাজ করছেন, এটাই বাংলাদেশের প্রকৃত সৌন্দর্য।
রিজভী অভিযোগ করেন, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা রাজনৈতিক স্বার্থে সমাজে বিভাজন তৈরি করেছেন। কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশের মানুষ বিভাজিত নয়। তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, লালন—এরা কারও একক সম্পদ নয়, এরা আমাদের সবার। এখানে ধর্মের কোনো দেয়াল নেই।’
তিনি দাবি করেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্গাপূজা কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে। এগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে একটি পক্ষের মদদে চলমান ষড়যন্ত্র। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘দেশের এক ইঞ্চি মাটির দিকে যদি কেউ কু-নজরে তাকায়, তবে তার চোখ উপড়ে ফেলা হবে। বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলমানের কোনো বিভেদ নেই—খাবার, পোশাক, সংস্কৃতি সবকিছুতেই আমরা এক।’