Sunday 05 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইবিতে ১০৮০ শিক্ষকের চাহিদা থাকলেও রয়েছেন ৪০৫ জন

খাদেমুল ইসলাম ফরহাদ, ইবি করেসপন্ডেন্ট
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:৫৫ | আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:০২

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া। ফাইল ছবি

ইবি: প্রয়োজনের চেয়ে অর্ধেকেরও কম সংখ্যক শিক্ষক দিয়ে চলছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম। ফলে মানসম্মত পাঠদান ও সেশনজটসহ বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। জানা গেছে, ৩৬টি বিভাগের মধ্যে ১৪টিতে অধ্যাপক এবং ১২টিতে নেই ডক্টরেট ডিগ্রিধারী শিক্ষক নেই। পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাবে ধার করা শিক্ষক দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে এসব বিভাগে।

সংকট নিরসনে বিভাগগুলো বারবার শিক্ষকের চাহিদা দিলেও প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবে নিয়োগ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিভাগীয় সভাপতিরা। এদিকে প্রশাসন ৫৯টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলেও ইউজিসির অর্থছাড় না থাকায় সেগুলো স্থগিত হয়ে গেছে। তবে এই খালি পদগুলো দ্রুত মঞ্জুর করার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম ফায়েজ।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬টি বিভাগে অ্যাক্রিডিটিশনের ন্যূনতম শর্ত পূরণে ১ হাজার ৮০জন শিক্ষক প্রয়োজন হলেও আছেন মাত্র ৪০৫ জন। এদিকে ১৪টি বিভাগে নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক। তার মধ্যে কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজমে বিভাগে দু’জন, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে দু’জন, সমাজকল্যাণে চারজন, ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগে চারজন, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে বিভাগে তিনজন, ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগে চারজন, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে চারজন, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগে চারজন, ফাইন আর্ট বিভাগে পাঁচজন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে পাঁচজন, মার্কেটিং বিভাগে পাঁচজন, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে পাঁচজন, জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগে চারজন এবং ফার্মেসি বিভাগে ছয়জন শিক্ষক রয়েছে। এর মধ্যে ফার্মেসিতে ছয়জনের মধ্যে তিনজন, জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগে চারজনের মধ্যে একজন ও ল’ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগে চারজনের মধ্যে একজন শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে রয়েছেন।

জানা গেছে, প্রয়োজনের চেয়েও কম সংখ্যক শিক্ষক থাকা বিভাগগুলোতে ছয় থেকে সাতটি ব্যাচ চলমান রয়েছে। ফলে অতিরিক্ত চাপ সামলাতে হচ্ছে শিক্ষকদের, সেইসঙ্গে সেশনজটে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। এসব বিভাগে শিক্ষক সংকটের পাশাপাশি রয়েছে অধ্যাপক ও ডক্টরেট ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষকের সংখ্যাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০৫ জন শিক্ষকের মধ্যে অধ্যাপক ২৫১জন এবং ডক্টরেটধারী শিক্ষক ২৬১জন। ফলে অধ্যাপক ছাড়া ১৪বিভাগ ও ডক্টরেটধারী ছাড়া ১২বিভাগ চলছে। এছাড়া, বর্তমানে মোট ৩৪জন শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে রয়েছেন। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাতের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ব্যাহত হচ্ছে।

রেজিস্ট্রার দফতর জানায়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অর্থ ছাড়ের পূর্বানুমতি ছাড়াই গত ২০ জানুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮টি অনুষদের ২১টি বিভাগে মোট ৫৯টি পদের বিপরীতে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী বিভিন্ন বিভাগে প্রার্থীরাও আবেদন করলেও পরে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিত করে। পরে গত ৩ আগস্ট ইউজিসি শিক্ষক স্বল্পতা বিবেচনায় মাত্র ছয়টি পদে অর্থ ছাড়ের অনুমোদন দেয়। ফলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

ইন্সটিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) পরিচালক অধ্যাপক ড. নাজিম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিভিন্ন বিভাগে মাত্র দুই-তিনজন শিক্ষক অনেকগুলো কোর্স পড়াচ্ছেন। এটি ইউজিসির ক্লাস লোড পলিসির পরিপন্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬টি বিভাগের জন্য অ্যাক্রিডিটেশনের ন্যূনতম শর্ত পূরণ করতে যেখানে ১ হাজার ৮০জন শিক্ষক প্রয়োজন, সেখানে শিক্ষক আছে মাত্র ৪০৫জন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা শিক্ষক নিয়োগের জন্য ইউজিসিতে চাহিদা দিয়েছি। ইউজিসি চেয়ারম্যান আমাদের দ্রুত শূন্যপদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করি দ্রুতই শিক্ষক সংকট নিরসন করতে পারব।’

ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফায়েজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শূন্যপদে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। কিছুদিনের মধ্যে আমাদের একটি মিটিং হবে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যতটুকু সম্ভব আমরা করব। এটা নিয়ে আমাদের একটি টিম কাজ করছে।’

সারাবাংলা/পিটিএম

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া শিক্ষক সংকট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর