Monday 06 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশের একাংশে খাদ্যের অতিভোজন, অন্যদিকে বছরে নষ্ট হয় ২ কোটি টন খাদ্য

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:৫৩ | আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:১৩

-ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: খাদ্যপণ্য উৎপাদনের পর সংরক্ষণ, অবকাঠামোর অভাব ও দাম নির্ধারণ পর্যায়ে বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্য অপচয় হয়। কৃষকের খামার থেকে শুরু করে ভোক্তার টেবিলে পৌঁছানো পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে বছরে প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ টন খাবার নষ্ট ও অপচয় হয়। অন্যদিকে দেশের একাংশে খাদ্যের অতিভোজন হচ্ছে এবং চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে দেড় কোটির বেশি মানুষ। এমন বাস্তবতায় খাদ্য নষ্ট হওয়া ও অপচয় অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বিষয়।

সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ’ (সিপিডি) আয়োজিত ‘খাদ্যের অপচয় রোধের মাধ্যমে টেকসই খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা’ শীর্ষক এক জাতীয় সম্মেলনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এসব কথা বলেন। সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন সম্মেলনের প্রথম পর্ব সঞ্চালনা করেন।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বব্যাংক ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এর প্রতিবেদনের সূত্র ধরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, দেশে এখনো ১ কোটি ৫৫ লাখ থেকে ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, যা ২০২৫ সালের শেষ পর্যন্ত চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফরিদা আখতার বলেন, সরকার একদিকে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে ও নিরাপদ করতে চেষ্টা করছে, অন্যদিকে বিপুল পরিমাণে খাদ্যপণ্য নষ্ট ও অপচয় হচ্ছে। দুধ, ডিম, মাংস, মাছ- সব জায়গায় একই সমস্যা। যেমন চান্দিনায় আমি নিজে দেখেছি, কৃষকেরা দুধ নষ্ট করে ফেলে দিয়েছেন। কারণ, পাইকারি ক্রেতারা ন্যায্য দাম দিতে চাননি। আবার আলু উৎপাদন বাড়ালেও কৃষকেরা দাম পাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, ইলিশসহ নির্দিষ্ট কিছু মাছ ধরতে গিয়ে বিপুল পরিমাণে মৎস্য সম্পদ নষ্ট হয়। প্রতিটি মাছ ধরার নৌযান যে পরিমাণে মাছ ধরে, তার দুই-তৃতীয়াংশই সমুদ্রে ফেলে দেয়। এতে জীববৈচিত্র্য ও সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে।

ফেলে দেওয়ার কারণ হিসেবে উপদেষ্টা বলেন, এসব মাছের হয়তো স্থানীয় চাহিদা নেই কিংবা তারা অনেক মাছ চেনেন না। আবার অবৈধ জাল দিয়ে মাছ ধরায় অনেক প্রজাতির মাছ ও সামুদ্রিক জীব ধরা পড়ছে। যদি জেলেদের সচেতন করা যেত এবং এসব মাছের রপ্তানি বাজার খুঁজে বের করা যেত, তাহলে তাঁরা অর্থনৈতিকভাবে আরও লাভবান হতেন।

সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হলেও এখনো অপুষ্টির সমস্যা রয়ে গেছে। খাদ্য বণ্টনে বৈষম্য আছে। তাই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য খাদ্য অপচয় রোধ করা অত্যন্ত জরুরি।

সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে ডেনমার্ক দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আন্দের্স কার্লসেন, খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ দিয়া সানু, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর জেসি উড, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইয়াসিন প্রমুখ।

সারাবাংলা/আরএস

‘খাদ্যের অপচয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী সিপিডি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর