চট্টগ্রাম ব্যুরো: দুর্গাপূজাকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.হাফিজুর রহমান। গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর প্রধান পূজামণ্ডপ হিসেবে পরিচিত জেএম সেন হল পরিদর্শন শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব রটানোর চেষ্টা একটা-দুইটা করা হয়েছে। পরে দেখা গেছে, সেগুলো শুধুমাত্র গুজব ছিল, আসলে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। চট্টগ্রামেও একটা গুজব ছড়িয়েছিল, যে ঘটনাটা আদৌ ঘটেনি। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আপনারা জানেন, পুলিশের একটি আলাদা সাইবার সিকিউরিটি সংস্থা আছে। তারা কাজ করছে।’
দুর্গাপূজা ঘিরে নাশকতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা ধর্মপ্রাণ মানুষ, তারা কোনো ধরনের নাশকতা বা দুষ্কৃতি করে না। তবে একটা সমাজে বিভিন্ন ধরনের মানুষ থাকে, এর মধ্যে দুষ্কৃতি মন-মানসিকতাসম্পন্ন মানুষ থাকতে পারে। দেশের ভেতরে কিংবা বাংলাদেশের রেপুটেশনকে খারাপ করার জন্য চেষ্টা করছে, এ ধরনের ব্যক্তি বা দল বা জনগোষ্ঠী এ ধরনের চেষ্টা করতে পারে। এ ধরনের চেষ্টা যে কোনো জায়গায় হতে পারে। এটার জন্য সুনির্দিষ্টভাবে কোনো মন্দিরকে ঝুঁকিপূর্ণ বলা ঠিক হবে না।’
‘এটা যে কোনো জায়গায় হতে পারে। এজন্য আমাদের পূজা কমিটির সঙ্গে সমন্বয় আছে। ভলান্টিয়ার এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথেও সমন্বয় আছে। আমরা বলেছি, নাশকতাকারী কিংবা দুষ্কৃতিকারী কাউকে সন্দেহ হলেই যেন র্যাবের হটলাইনে যোগাযোগ করা হয়।’
চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও ফেনী জেলায় এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি বলে তিনি জানান।
র্যাব কর্মকর্তা হাফিজুর আরও বলেন, ‘দুর্গাপূজা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। দুর্গাপূজা ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে। বিজয়া দশমীর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আগামী ২ অক্টোবর এ উৎসব শেষ হবে। এ সময় যাতে শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে, সেজন্য গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় র্যাবের পক্ষ থেকে বিশেষ চেকপোস্ট ও টহল কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।‘
‘পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বিক নিরাপত্তা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরসহ প্রায় ২৫টি স্থানে নিয়মিত চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা টিম, টহল টিম কাজ করছে। যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধে র্যাব সদস্যরা চট্টগ্রামে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত আছেন।’
এ সময় চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অর্পণ কান্তি ব্যানার্জী ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিখিল কুমার নাথ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, র্যাব-৭ অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান নগরীতে আরও পাঁচটি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন।