ঢাকা: শারদীয় দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীতে আজ রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী কুমারীপূজা।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় শুরু হওয়া এ পূজায় হাজারো ভক্ত অংশ নেন। মণ্ডপ মুখরিত হয়ে ওঠে ঢাকঢোল, শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনিতে।
এবার কুমারী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে সাত বছর বয়সী লাবণ্য চট্টোপাধ্যায়। শাস্ত্র অনুযায়ী তার দেবী নাম রাখা হয়েছে ‘মালিনী’। কুমারী দেবীর বাবার নাম বিজয় চট্টোপাধ্যায়। সকাল থেকেই পূজামণ্ডপে ভক্তদের ভিড় জমে। ‘কুমারী মায়িকি জয়, দুর্গা মায়িকি জয়’ ধ্বনিতে মণ্ডপে আনা হয় কুমারী দেবীকে। দুর্গা প্রতিমার সামনেই স্থাপন করা হয় তার বেদি।
পুরোহিতদের মন্ত্রপাঠ ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় পূজা। পরে পঞ্চ উপকরণে কুমারী দেবীর আরাধনা করেন ভক্তরা। দুপুর ১২টার দিকে পূজা সম্পন্ন হয়।
শাস্ত্রমতে, সব নারীর মধ্যেই বিরাজিত আছে দেবীশক্তি, তবে কুমারী রূপেই তা বিশেষভাবে প্রকটিত হয়। সেই বিশ্বাস থেকেই শতবর্ষ ধরে রামকৃষ্ণ মিশনসহ বিভিন্ন মন্দিরে কুমারীপূজার আয়োজন করা হয়। স্বামী বিবেকানন্দ ১৯০১ সালে বেলুড়মঠে দুর্গাপূজার সঙ্গে কুমারীপূজার প্রচলন করেন।
শাস্ত্রমতে, কুমারীপূজার উদ্ভব হয় বানাসুর বা কোলাসুরকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে। উল্লেখ্য, কোলাসুর নামক অসুর এক সময় স্বর্গ-মর্ত্য অধিকার করে নেয়। কোলাসুর স্বর্গ-মর্ত্য অধিকার করায় বাকি বিপন্ন দেবগণ মহাকালীর শরণাপন্ন হোন। সেসব দেবগণের আবেদনে সাড়া দিয়ে দেবী দেবতাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে দেবী মানবকন্যারূপে জন্মগ্রহণ করেন কুমারী অবস্থায় কোলাসুরকে হত্যা করেন। পুনর্জন্মে কুমারীরূপে কোলাসুরকে বধ করেন। এরপর থেকেই মর্ত্যে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়। প্রতি বছর দুর্গাদেবীর মহাঅষ্টমী পূজাশেষে কুমারীপূজা অনুষ্ঠিত হয়।
আগামী ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে দেবী বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে দুর্গোৎসব।