পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আইনগতভাবে এনসিপি শাপলা প্রতীক পায়। তবে তা আদায়ে যদি রাজপথ বা আদালতে যেতে হয়, আমরা যাব।’ তিনি মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের হুদুপাড়া শ্রী শ্রী সার্বজনীন দূর্গা মন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ড. মোহাম্মদ ইউনুস তার জায়গা থেকে বলেছেন বিদেশী কিছু শক্তি তাদের জায়গা থেকে নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে। এই জায়গায় এনসিপি বা অন্য কোনো দলের কথা যদি বলেন, আমরা বলব, আমরা চাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন হোক। কিন্তু আমরা আমাদের জায়গা থেকে সব সময় যেটা বলেছি সেটা হচ্ছে, একটা বিচার এবং সংস্কারের প্রক্রিয়া মধ্য দিয়ে গিয়ে একটা সুস্থ নির্বাচন হোক। এটা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য খুবই জরুরী।’
সারজিস বলেন, ‘আমাদের শাপলা প্রতীক পাওয়ার সঙ্গে নির্বাচন পেছানোর বা এগোনোর কোনো সম্পর্ক নাই, আমরা যেহেতু আইনগতভাবে শাপলা পাই, তাই আইনগত কোনো বাধা নেই। আমরা মনে করি নির্বাচন কমিশন তার ওই মেরুদন্ড শো করবে যে, তারা বাইরের কোনো চাপে মাথানত না করে আমাদের শাপলা প্রতীক দিয়ে দেবে। এটা আমাদের প্রত্যাশা থাকবে। শাপলা প্রতীক পেতে যদি আমাদের আইনগতভাবে যাওয়া লাগে, রাজপথে যাওয়া লাগে, আমরা সেভাবে যাব। এটার সঙ্গে নির্বাচন এগোনো বা পেছানোর কোনো সম্পর্ক নেই।’
সারজিস আরো বলেন, ‘দেশকে কিছুটা অস্থিশীল করতে কিছু মানুষ এই ধরনের কথা বলছেন যে, উনারা যদি মার্কা না পায় তখন উনারা যে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবে, এটা নির্বাচন পেছানোর চক্রান্ত। আমরা স্পষ্ট করে বলি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি মনে করে তারা ফেব্রুয়ারির প্রথমে নির্বাচন দেবে এনসিপির সেই জায়গায় কোনো আপত্তি থাকবে না। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমরা একটা দৃশ্যমান বিচার দেখতে চাই। জুলাই সনদের আমরা আইনগত ওই ভিত্তিটা চাই যেটার মধ্য দিয়ে আমাদের মৌলিক সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের এনসিপির পক্ষ থেকে ছোট্ট উপহার তাদের হাতে তুলে দিচ্ছি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, তাদের অবস্থাটা জানার চেষ্টা করছি। মন্দিরের অবস্থা, তাদের যে পারিপার্শ্বিক অবস্থা-এগুলো আমরা জানার চেষ্টা করছি এবং সে অনুযায়ী নোট করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পূর্ববর্তী সময়ে ওই আওয়ামী লীগ শুধু নামকাওয়াস্তে যখন দরকার ছিল তখন আমাদের সনাতন ধর্মের ভাইদের কাছে এসেছে। কিন্তু, আপনারা দেখে থাকবেন তখন বাংলাদেশের অনেক বড় বড় মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। লোক দেখানো একটা কমিটি হয়েছিল। তখন লোক দেখানো দুই একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু, তখন আমরা না দেখেছি কোনো দৃশ্যমান শাস্তি, না দেখেছি কঠিন কোনো বিচার। এই কারণে কিন্তু অনেক ষড়যন্ত্রকারী চক্রান্তকারী ওই টুলটাকে বারবার ব্যবহার করেছে এবং ধর্মীয় যে আমাদের সম্প্রীতির পরিবেশ ওই জায়গায় ব্যাঘাত ঘটানোর চেষ্টা করেছে। আমাদের জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির পক্ষ থেকে আমাদের সরকারের পাশে স্পষ্ট আহ্বান থাকবে এরকম কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা যদি বাংলাদেশে ঘটে থাকে, তাহলে আপনারা দৃশ্যমান সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করবেন। গতকাল থেকে এখন পর্যন্ত আমরা পঞ্চগড়ের পনেরোটা দুর্গা মন্দিরে গেছি। প্রত্যেক জায়গায় আমরা বিজিবি, পুলিশ, র্যার, আনসার বাহিনী যারা আছে তাদের বিভিন্ন ধরনের উপস্থিতি আমরা ভালোভাবে দেখেছি এবং নিরাপত্তা আমাদের কাছে সন্তোষজনক ছিল।’
মন্দির পরিদর্শনকালে সারজিস মন্দির কমিটির হাতে এনসিপির পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
এসময় সদর উপজেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী তানবিরুর বারী নয়ন, জেলা যুবশক্তির আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার আবু কায়েস বাবুসহ এনসিপির ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।