সাতক্ষীরা: সারি সারি চেয়ারে বসে পূজা দিচ্ছেন মায়ের ভক্তরা। এরই মাঝে দেখা যাচ্ছে এক ব্যক্তিকে। যার গায়ে আনসারের পোশাক। হাতে ডিউটিরত লাঠি। এভাবে মায়ের পূজায় অঞ্জলি দিতে আসা ভক্তদের মাঝে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কখনো কখনো ভিড় সামলাছেন মন্দিরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে, আবার কখনো ভক্তদের অঞ্জলি দেওয়ার জায়গা করে দিচ্ছেন। এভাবে রাত দিন মণ্ডপে ডিউটিরত অবস্থায় পরিশ্রম করে যাচ্ছেন দেবব্রত নামের এই যুবক।
বুধবার (১ অক্টোবর) কলাগাছি সার্বজনীন দূর্গা মণ্ডপে দেখা যায় এই আনসার সদস্যকে। তবে, ব্যতিক্রম বলতে। তার কার্যক্রমের সঙ্গে সঙ্গে পূজায়ও নিয়োজিত তিনি। সবাই যখন পূজায় নিয়োজিত ঠিক তেমনি তিনিও ডিউটির সঙ্গে পূজা দিতে ব্যস্ত। পাশে যেতেই তার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম। তিনিও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ।
ডিউটি রেখে কী করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মায়ের পূজা কীভাবে বাদ রাখি বলেন। কাজের সুবাদে আনসার সদস্যে যোগ দিয়েছি। তাই পূজায় ডিউটির পাশাপাশি মায়ের অঞ্জলিতে ব্রতী হয়েছি। বছরের এই পাঁচদিন আমরা অপেক্ষা করে থাকি। বছরে এই দিনগুলোর প্রতিক্ষায় থাকে ভক্তরা। মা কোন সময় আমাদের মাঝে আসবেন। কিন্তু আনসার সদস্য হয়ে এই মন্দিরে ডিউটি পড়েছে। তাই ডিউটির সঙ্গে সঙ্গে মায়ের পূজা দিচ্ছি। একসঙ্গে ডিউটিও করা হচ্ছে সঙ্গে পূজাও দিতে পারছি।’
কলাগাছি পূজা মণ্ডপের পুরোহিত শিবপদ ব্যানার্জী বলেন, ‘মহাপূজোর অন্তিম তিথি হল নবমী। যা ‘মহা’ অভিধা পেয়েছে। এ দিনের মূল আকর্ষণ বলিদান। তাতে ছাগ থেকে শুরু করে মাছ, মহিষ ইত্যাদি নিবেদনের রেওয়াজ রয়েছে। এক কালে এক একটি রাজ পরিবার নরবলি অবধি দেওয়া হতো। শাক্ত আরাধনা মাত্রই বলিদানের রীতি এবং আরাধ্যের উদ্দেশ্যে কোনো না কোনো জীবকে উৎসর্গ করাই নিয়ম। একদা ব্রাহ্মণদের মধ্যে কেবল বলিদানের মাংস খাওয়ার চল ছিল। বলির মাংস ছাড়া অন্য মাংসকে বলা হতো ‘বৃথা মাংস’।’