Wednesday 01 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রংপুরে আরও ৯ জনের অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:০৯ | আপডেট: ১ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:৩৪

চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন আইইডিসিআর-এর স্বাস্থ্যকর্মী। ছবি: সংগৃহীত

রংপুর: গত আগস্টে রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স রোগে দুইজনের মৃত্যুর পর এবার মিঠাপুকুর ও কাউনিয়া উপজেলায়ও এই ভয়াবহ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর পরীক্ষায় এই দুই উপজেলায় মোট নয়জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। বিস্তার রোধে স্বাস্থ্যকর্মীরা নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করছেন সতর্কতার সঙ্গে।

পীরগাছায় গত আগস্ট মাসে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে দুজন মারা যান এবং চারটি ইউনিয়নে দুই শতাধিক মানুষের এই রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরীক্ষায় অসুস্থ গরুর মাংস থেকে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়। পরবর্তীতে আইইডিসিআরের একটি দল ১৩-১৪ সেপ্টেম্বর পীরগাছা সদর ও পারুল ইউনিয়ন থেকে ১২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে, যার মধ্যে আটজনের রোগ নিশ্চিত হয়।

বিজ্ঞাপন

রংপুর জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক আরবিন্দু কুমার মোদক বলেন, প্রাথমিকভাবে পীরগাছায় ১২জনের নমুনা থেকে আটজন এবং মিঠাপুকুরে চারজনের মধ্যে একজনের শরীরে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়েছে। আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।

তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্যকর্মীদের নমুনা সংগ্রহের প্রশিক্ষণ দিয়েছে আইইডিসিআর। তারা আক্রান্তের খবর পেলেই নমুনা আনার ব্যবস্থা করছে এবং সচেতনতা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

আইইডিসিআরের সূত্র জানায়, ফ্রিজে রাখা গরুর মাংস ছাড়াও ছাগলের মাংসের সংস্পর্শে একজনের শরীরে এই রোগ ছড়িয়েছে। এটি নতুন উদ্বেগের বিষয়। কারণ, রংপুরে আগে ছাগলের মাংসে এমন ঘটনা দেখা যায়নি।

পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন পর্যন্ত শতাধিক রোগী বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেকে অন্যান্য চিকিৎসাও নিয়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুহাম্মদ তানভীর হাসানাত বলেন, আক্রান্ত এলাকায় মেডিকেল টিম পাঠিয়ে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। বেশিরভাগ আক্রান্ত সুস্থ হয়েছেন। আর কেউ যাতে আক্রান্ত না হন, সেজন্য কঠোর নজরদারি চলছে।

চিকিৎসকদের মতে, গবাদিপশুর শ্লেষ্মা, লালা, রক্ত, মাংস বা নাড়িভুঁড়ির সংস্পর্শে এলে মানুষ অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত হন। এটি প্রাণী থেকে মানুষে ছড়ায়, কিন্তু মানুষ থেকে মানুষে নয়। এর প্রধান লক্ষণ চামড়ায় ঘা।

রংপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন রুহুল আমিন বলেন, আক্রান্তদের জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। চিকিৎসা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মূল প্রতিরোধ প্রাণিসম্পদ বিভাগের দায়িত্ব।

পীরগাছা, পারুল, ছাওলা ও তাম্বুলপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা দাবি করেন, গত দুই মাসে এক হাজার গবাদিপশু অ্যানথ্রাক্সে মারা গেছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু ছাইদ বলেন, জেলায় ১৩ লাখের বেশি গরু-ছাগল রয়েছে। আগস্টের শেষ থেকে পীরগাছা, কাউনিয়া, মিঠাপুকুর ও সদরে এক লাখ ৬৫ হাজার গবাদিপশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে। ছাগলের ক্ষেত্রে আক্রান্তের হার কম, আতঙ্কের কারণ নেই। মসজিদ-মন্দির, হাটবাজারে সচেতনতা চলছে।

সারাবাংলা/জিজি

অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর