যুদ্ধাপরাধ ও রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআর কঙ্গো) সাবেক প্রেসিডেন্ট জোসেফ কাবিলাকে (৫৪) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে দেশটির আদালত।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এর আগে, শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এই রায়ের ঘোষণা দেয় কঙ্গোর সামরিক আদালত।
এ রায়ে কাবিলাকে রাষ্ট্রদ্রোহ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। অভিযোগগুলোর মধ্যে হত্যা, যৌন সহিংসতা, নির্যাতন ও বিদ্রোহে উসকানির মতো বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত। এম২৩ বিদ্রোহীদের সহায়তার অভিযোগে তার অনুপস্থিতিতেই এই আদেশ দিয়েছে আদালত।
কাবিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি পূর্ব কঙ্গোতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো বিদ্রোহী গোষ্ঠী এম২৩-কে সহায়তা করেছেন। তবে, আদালতে হাজির না হয়ে কাবিলা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং আদালতকে ‘দমননীতির হাতিয়ার’ বলে আখ্যা দেন। বর্তমানে তিনি অজ্ঞাত অবস্থানে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে আততায়ীর গুলিতে নিহত বাবা লরঁ কাবিলার পর ক্ষমতায় আসেন জোসেফ কাবিলা। টানা ১৮ বছর দেশ শাসন করে ২০১৯ সালে তিনি ক্ষমতা হস্তান্তর করেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স সিসেকেদিকে। পরে সম্পর্কের অবনতি হলে ২০২৩ সালে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে চলে যান সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।
গত এপ্রিলে তিনি জানান, পূর্বাঞ্চলে চলমান সংঘাত নিরসনে ভূমিকা রাখতে চান। এরপর চলতি বছরের মে মাসে এম২৩-নিয়ন্ত্রিত গোমা শহরে হাজির হন তিনি।
কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট সিসেকেদি অভিযোগ করেন, কাবিলাই এম২৩ বিদ্রোহীদের পেছনের মূল পরিকল্পনাকারী। এরপর সিনেট তার সাংবিধানিক দায়মুক্তি প্রত্যাহার করে দেয় এবং এর মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়ার পথ উন্মুক্ত হয়।
এই বছর এম২৩ বিদ্রোহীরা খনিজসমৃদ্ধ পূর্বাঞ্চলের বড় অংশ দখল করে নেয়। দখলকৃত অঞ্চলের মধ্যে গোমা, বুকাভু শহর এবং দুটি বিমানবন্দরও রয়েছে। জাতিসংঘসহ একাধিক পশ্চিমা দেশ অভিযোগ করেছে, প্রতিবেশী রুয়ান্ডা এম২৩-কে সমর্থন দিচ্ছে এবং হাজারো সেনা কঙ্গোতে পাঠিয়েছে।
তবে কিগালি অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, তারা শুধু সংঘাতের প্রভাব নিজেদের ভূখণ্ডে ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কাজ করছে।
পরে চলতি বছরের জুলাইয়ে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরকারের যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও এখনো কঙ্গো পূর্বাঞ্চলে যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে।