ঢাকা: বরাবরের মত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর চলমান ঋণের ৬ষ্ঠ কিস্তি ছাড়ের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শর্ত পূরণ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। আর শর্ত পরিপালনে গত জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের অগ্রগতি পর্যালোচনায় চলতি মাসের শেষে (২৯ অক্টোবর) আইএমএফ প্রতিনিধিদলের ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ৬ষ্ঠ কিস্তির আওতায় ৪৫ কোটি ডলার ছাড় করবে আইএমএফ। সফরকালে জুন পর্যন্ত প্রায় ১৮টি বিষয় পর্যালোচনা করবে সংস্থাটি। এর মধ্যে ৬টি আবশ্যক মানদণ্ড পূরণ করতে হবে।
সূত্র মতে, রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা এবং জ্বালানি ও সার আমদানির বকেয়া পরিশোধে অগ্রগতি হলেও আইএমএফ-এর প্রদত্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, জুনে আইএমএফ-এর ১ হাজার ৭৪০ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২ হাজার ৭৩ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। সেপ্টেম্বরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৮৬৫ কোটি ডলার। এর বিপরীতে ২ হাজার কোটি ডলারের বেশি অর্জিত হয়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি ও আমদানি কমে যাওয়ায় রিজার্ভ বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এছাড়া জুনের মধ্যে বৈদেশিক পাওনা ৮৭ কোটি ডলারের নিচে এবং দেশীয় পাওনা ২৮ হাজার ৭০ কোটি টাকার নিচে রাখার শর্ত ছিল।
জানা যায়, এর বিপরীতে জুনে বৈদেশিক পাওনা ৩১ কোটি ৪০ লাখ ডলার এবং স্থানীয় পাওনা ১৮ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।
তবে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। গত জুন পর্যন্ত ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫৩০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা।
প্রসঙ্গত: বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত বিশ্বের সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। এ কারণে রাজস্ব আদায় বাড়াতে বিশেষ জোর দিয়েছে আইএমএফ।
এদিকে গত জুনে বাংলাদেশের জন্য প্রথম বারের মতো বিদেশি ঋণ গ্রহণের সীমা বেঁধে দিয়েছে আইএমএফ। যা ইতোপূর্বে চলমান ঋণ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল না। শর্ত অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৮৪৪ কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবে বাংলাদেশ। গত জুনে ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির ১৩৪ কোটি ডলার ছাড়ের পর আইএমএফ ‘বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপোর্ট’ প্রকাশ করে। সেখানে পরবর্তী কিস্তি পেতে যেসব শর্ত মানতে হবে, তার মধ্যে নতুন এ সীমা অন্যতম। শর্ত অনুযায়ী, ত্রৈমাসিকভিত্তিক ঋণের পরিমাণও নির্ধারণ করে দিয়েছে সংস্থাটি। প্রথম তিন মাসে সর্বোচ্চ ১৯১ কোটি, ছয় মাস শেষে ৩৩৪ কোটি, নয় মাসে ৪৩৪ কোটি এবং পুরো অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৮৪৪ কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে। প্রতি তিন মাস অন্তর বিদেশি ঋণের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবে আইএমএফ।
উল্লেখ্য, আইএমএফ-এর চলমান ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তিটি গত ২০২৩ সালে অনুমোদন দেওয়া হয়। চলতি বছরের গত জুনে ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড় করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঋণের মেয়াদ ছয় মাস ও ঋণের পরিমাণ ৮০ কোটি ডলার বাড়ানে হয়েছে। এ নিয়ে মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৫০ কোটি ডলার। এর বিপরীতে এখন পর্যন্ত সংস্থাটির শর্ত অনুযায়ী চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ৮৪৪ কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবে বাংলাদেশ। গত জুনে ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির ১৩৪ কোটি ডলার ছাড়ের পর আইএমএফ ‘বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপোর্ট’ প্রকাশ করে। সেখানে পরবর্তী কিস্তি পেতে যেসব শর্ত মানতে হবে, তার মধ্যে নতুন এ সীমা অন্যতম। শর্ত অনুযায়ী, ত্রৈমাসিকভিত্তিক ঋণের পরিমাণও নির্ধারণ করে দিয়েছে সংস্থাটি। প্রথম তিন মাসে সর্বোচ্চ ১৯১ কোটি, ছয় মাস শেষে ৩৩৪ কোটি, নয় মাসে ৪৩৪ কোটি এবং পুরো অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৮৪৪ কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে। প্রতি তিন মাস অন্তর বিদেশি ঋণের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবে আইএমএফ। এর বিপরীতে এখন পর্যন্ত ৩৬০ কোটি ডলার ছাড় করা হয়েছে।