ইবি: মেসের খাবারের ফিক্সড-মিল (প্রতি মাসের আবশ্যকীয় মিল) নির্ধারণ নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সিনিয়র-জুনিয়র শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় মেস মালিকসহ দুপক্ষের চারজন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে কুষ্টিয়া সদরের পিটিআই রোডের একটি মেসে এই সংঘর্ষ ঘটে।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন—ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সজীব ইসলাম এবং ইনভাইরনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড জিওগ্রাফি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের হাসিবুজ্জামান নয়ন। অপর পক্ষের আহত শিক্ষার্থী হলেন—ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মনিরুল ইসলাম রোহান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত মাসে মেসের ফিক্সড মিল ৪০ নাকি ৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে এ নিয়ে সিনিয়র ও জুনিয়রদের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে তা হাতাহাতি ও মারামারিতে গড়ায়।
আহত শিক্ষার্থী সজীব ইসলাম অভিযোগ করেন, মিলের বিষয়ে কথা বলার সময় সিনিয়র মনিরুল ইসলাম রোহান হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। প্রতিবাদ করায় রোহান তার মুখে, মাথায় ঘুষি মারেন এবং মাটিতে ফেলে মাথা ও শরীরে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এতে তার চোখ রক্তবর্ণ ধারণ করে এবং পায়ে আঘাত লাগে। সজীবকে গুরুতর আহত অবস্থায় কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী হাসিবুজ্জামান নয়নও একই অভিযোগ করে জানান, রোহান তাদেরকে রুম থেকে জোর করে বের করে দেন এবং সজীবকে মারধর করেন।
অন্যদিকে মনিরুল ইসলাম রোহান দাবি করেন, খাবারের বিল নিয়ে মতবিরোধ হওয়ায় সজীব ও নয়ন তাকে মারতে আসে। কিছুক্ষণ পর সজীব ও নয়ন কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি-সেক্রেটারিসহ ২৫-৩০ জন লোক নিয়ে এসে তাকে মারধর করে। রোহান অভিযোগ করেন, তাকে কুষ্টিয়া ছাড়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
আহত উভয় পক্ষই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও নিরাপত্তা দাবি করেছে।
মেস মালিক তুহিন জানান, সজীব আর রোহানের ধস্তাধস্তির সময় তিনি ছিলেন না। পরে বাইরে দুপক্ষের ঝামেলা থামাতে গিয়ে তিনিও হাতে ব্যথা পান। পরে তিনি রোহানকে রুমে পাঠিয়ে দেন এবং সজীবকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, আহত সজীব ইসলামের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, বিশেষ করে হাত, মুখমণ্ডল ও চোখে। তাকে সিটি স্ক্যান ও এক্সরে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামানের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন কেটে দেন।