ঢাকা: দেশে তিন দিনব্যাপী ‘সৌদি-বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ সোমবার (০৬ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে। উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে গঠিত নতুন সংগঠন ‘সৌদি আরব-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’ (এসএবিসিসিআই) এ সামিটের উদ্যোক্তা। রাজধানীর বনানীর শেরাটন হোটেলে সামিটের মূল আয়োজন অনুষ্ঠিত হবে।
সামিট উপলক্ষ্যে রোববার (০৫ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে সিটি ব্যাংক সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি আশরাফুল হক চৌধুরী এসব কথা জানান।
‘দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা চিহ্নিত করা এ সামিটের মূল উদ্দেশ্য’- উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পরও দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে কোনো ব্যবসায়ী সংগঠন হয়নি। কেন হয়নি- তা আমাদের জানা নেই। প্রাণ-আকিজসহ ১০-১৫ কোম্পানি ছাড়া সৌদি আরবে অন্যরা তেমন কেউ রফতানি করে না। অথচ প্রায় ৩০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি সেখানে বাস করছেন। সেখানে ব্যবসার বড় বাজার রয়েছে।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনীতির চাকা যদি সামনের দিকে নিতে চাই তাহলে আমাদের নতুন বাজার খুঁজতে হবে। কিন্তু আমরা ইউরোপ ও আমেরিকার ওপর এত বেশি নির্ভরশীল যে, অন্য কোনো দেশের ব্যাপারে চিন্তা করতে পারি না। এছাড়া বাণিজ্য যুদ্ধে কত রকমের সমস্যা দেখছি। ভবিষ্যতে হয়তো আরও হবে। সৌদি আরব-কে যদি বিকল্প বাজার হিসেবে গড়ে তোলা যায়, এর সুফল আমাদের ব্যবসায়ীরা পাবেন।
সৌদি আরবে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা তৈরি পোশাক, টুপি, প্যাকেটজাত খাবার রফতানি করছেন। আর সৌদি আরব থেকে ক্রুড ওয়েল, খেজুরসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করছেন।
আশরাফুল হক চৌধুরী জানান, সামিট উপলক্ষ্যে সৌদি আরব থেকে ২০ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসবে। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকবেন উমরান গ্রুপের মালিক শেখ ওমর আব্দুল হাফিজ আমির বকশ। প্রতিনিধিদলে থাকছেন ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ, স্বাস্থ্যখাতের বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিরা। প্রতিনিধিদলটি সোমবার ঢাকায় পৌঁছাবে। সামিটে বাংলাদেশের ২২টি স্টল থাকবে। সেখানে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) একটি স্টলও থাকবে।
তিনি জানান, মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকালে বনানীর শেরাটন হোটেলে বিজনেস সামিটের মূল আয়োজন হবে। সেখানে বাণিজ্য উপদেষ্টা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। ওইদিন রাতে এসএবিসিসিআ-ইতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
এসএবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ বলেন, সৌদি আরবে অনেক বাংলাদেশি সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছেন। আমরা তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই। বাংলাদেশ সম্পর্কে সৌদি আরবের ব্যবসায়ীদের ধারণা খুবই কম। যে ২০ জন বাংলাদেশে আসছেন তাদের বেশিরভাগই প্রথমবারের মতো আসছেন। যারা আসছেন তাদের ব্যবহার করার চেষ্টা করবো। কিছু না কিছু ব্যবসা তো হবেই।
এসএবিসিসিআই পরিচালক ও প্রাণ এগ্রো লিমিটেডের পরিচালক উজমা চৌধুরী বলেন, দুই দেশের ব্যবসায়িক ও বাণিজ্য সমস্যা সমাধানে এসএবিসিসিআই কাজ করবে। সামিটে সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা উঠে আসবে। এছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবে। আমরা সমস্যাগুলো সমাধানের উপায় নিয়ে কাজ করবো।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, ২৫ বছর আমরা সৌদিতে পণ্য রফতানি করছি। কেবল পণ্য নয়, দক্ষ জনশক্তিও রফতানি করতে চাই। সৌদি আরবে দক্ষ নার্সের চাহিদা আছে। আইটি প্রকৌশলীসহ নানান পেশাজীবীর চাহিদা আছে। দক্ষ নার্সের চাহিদা মেটাতে নাটোরে আমজাদ খান চৌধুরী নার্সিং কলেজ কাজ করছে।