ঢাকা: বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা আজ সোমবার (৬ অক্টোবর)। আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত এই দিনটি বৌদ্ধদের কাছে যেমন ধর্মীয় পবিত্রতা ও আত্মশুদ্ধির প্রতীক, তেমনি এটি সামাজিক সম্প্রীতি, আলো ও আনন্দেরও উৎসব।
প্রবারণা শব্দের অর্থ ‘অনুমতি’ বা ‘অনুশাসন গ্রহণ’। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তিন মাসব্যাপী বর্ষাবাস (বৃষ্টি মৌসুমে নির্দিষ্ট বিহারে অবস্থান) শেষে এই দিনে নিজেদের ভুল, ত্রুটি ও আচরণের জন্য একে অপরের কাছে ক্ষমা চান।
গৌতম বুদ্ধ নিজেও এই প্রথার সূচনা করেন, যাতে ভিক্ষু সমাজ আত্মসমালোচনার মাধ্যমে শুদ্ধ হতে পারে। এই আত্মশুদ্ধির দর্শন থেকেই প্রবারণা পূর্ণিমা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় আচার নয়, বরং জীবনের এক গভীর শিক্ষাও দেয়—’ভুল স্বীকারই সত্যিকারের জ্ঞানের প্রথম ধাপ।’
প্রবারণা কেবল বৌদ্ধদের উৎসব নয়; এটি সহিষ্ণুতা, করুণা ও মানবতার উৎসব। এই দিনে বৌদ্ধরা প্রতিজ্ঞা করেন- অন্যের ক্ষতি নয়, বরং সবার মঙ্গল কামনা করবেন। তাই এই উৎসবের মূল শিক্ষা হলো ভালোবাসা ও শান্তির চর্চা।
প্রবারণা পূর্ণিমার মধ্য দিয়েই শুরু হয় কঠিন চীবর দান উৎসব, যেখানে নতুন কাপড় বুনে একদিনের মধ্যে ভিক্ষুদের দান করা হয়। এই উৎসবও বৌদ্ধ সমাজে ঐক্য, শ্রম ও দানশীলতার প্রতীক। আজ রাজধানীর বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারেও থাকবে ধর্মীয় আলোচনা, প্রার্থনা সভা, প্রদীপ প্রজ্বালন ও আলোকসজ্জা।
আলো, অনুশোচনা ও মমতার এই দিনে বৌদ্ধরা যেমন নিজেদের অন্তরে শান্তি খোঁজেন, তেমনি সমাজে ছড়িয়ে দেন সদাচার ও মানবতার আলো। প্রবারণা পূর্ণিমা আমাদেরও মনে করিয়ে দেয় ভালো থাকা মানে কেবল নিজে নয়, অন্যের জীবনেও আলো ছড়িয়ে দেওয়া।