Monday 06 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গুজব রোধে তাৎক্ষণিকভাবে সঠিক তথ্য সরবরাহের পরামর্শ সংবাদকর্মীদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:৩৭ | আপডেট: ৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:২৭

ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সঙ্গে আয়োজিত সংলাপ।

ঢাকা: মিডিয়াকে অবাধ স্বাধীনতা দিলে ও সঠিক তথ্য সরবরাহ করলে ভোটকে কেন্দ্র করে কোনো গুজব ছড়াবে না বলে মনে করেন সাংবাদিকরা।

সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সঙ্গে আয়োজিত সংলাপে এসব কথা বলেন গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা।

এ সময় সংলাপে অংশ নিয়ে একাত্তর টিভির বার্তা প্রধান শফিক আহমেদ বলেন, `সিইসি ও কমিশনারদের মর্যাদা মন্ত্রীর ওপরে রাখতে হবে। প্রশাসনের বদলে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া উচিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘গণমাধ্যমে ভোটের খবর সংগ্রহে নীতিমালা সহায়ক নয়। এতে কারচুপির সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পারি না। তাই সহায়ক নীতিমালা তৈরি ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।’

বিজ্ঞাপন

যমুনা টিভির জ্যেষ্ঠ বার্তা সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসন ও পুলিশের দায়-দায়িত্ব ইসিকে নিতে হবে। মাঠের কর্মকর্তাদের মধ্যে ভয় কাজ করে, তারা ভোটের পর ক্ষমতাসীন দলের রোষানলে পড়তে পারেন-এমন ধারণা পরিবর্তন করতে হবে।’

ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক মোস্তফা আকমল বলেন, ‘নির্বাচনে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার। এক মিনিটেই ভুয়া ছবি তৈরি করা যায়, প্রার্থীদের ভাবমূর্তি নষ্ট করা সম্ভব।’ তিনি ভোটার তালিকা হালনাগাদে ত্রুটি দূর করা ও ফলাফল দ্রুত প্রকাশের আহ্বান জানান।

চ্যানেল আইয়ে চিফ নিউজ এডিটর জাহিদ নেওয়াজ খান বলেন, ‘সঠিক তথ্য দ্রুত প্রকাশ করা গেলে গুজব কমবে। আমরা মাঠে যাই বিশৃঙ্খলার খবর পেতে। তাই ইসি যত দ্রুত ফলাফল দেবে, তত দ্রুত আমরা প্রচার করতে পারব।’

ডিবিসি টিভির সম্পাদক লোটন একরাম বলেন, ‘সংস্কার কমিশন অনেক কাজ এগিয়ে দিয়েছে। এ জন্য আপনারা অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ দেরি করছেন। কিন্তু আমরা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে যে প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম সেগুলো আমলে না নিয়েই যদি নীতিমালা করেন তাহলে তো আজকের এই সংলাপ ফলপ্রসূ হলো না। কাজেই নীতিমালা সংশোধন করা উচিত ‘

এটিএন নিউজের হেড অব ইনপুট শহিদুল আজম বলেন, ‘নিবন্ধিত গণমাধ্যম নিয়ম মেনে চলে, কিন্তু ইউটিউব বা মোবাইলভিত্তিক প্ল্যাটফর্মে খবর ছড়ানো ঠেকানো কঠিন। তাই ইসির তথ্য শাখাকে শক্তিশালী করতে হবে।’

সময় টিভির জ্যেষ্ঠ বার্তা সম্পাদক জহুরুল ইসলাম জনি বলেন, ‘গুজব তৈরি হলে সঙ্গে সঙ্গে কমিশনকে তাক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হবে। তখনই জানাতে হবে। সেটা কমিশনকে সঙ্গে সঙ্গে মূল ধারার গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করতে হবে।’

নিউজ২৪এর হেড অব নিউজ শরিফুল ইসলাম খান বলেন, ‘সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। ভোট মানেই এক সময় ফ্যাস্টিভ মুভ ছিল। ধীরে ধীরে এটা রক্তক্ষয়ী অবস্থায় চলে আসছে। শুধু কাগজ দিয়ে, আইন দিয়ে মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবেন না। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বৃত্তের বাইরে গিয়ে চিন্তা করতে হবে। অন্যথায় সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবেন না। সুষ্ঠু নির্বাচনের সহায়ক হবে গণমাধ্যমের এমন স্বাধীনতা দিতে হবে। এতে ইসিরও লক্ষ্য পূরণ সহজ হবে।’

বিটিভির বার্তা সম্পাদক মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘আপনাদের নির্দেশনায় কাজ করব। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নজরদারিতে রাখতে হবে। ফেক নিউজ ছড়াবে। দ্রুত আমাদের চিহ্নিত করে জানাবেন, যাতে আমরা কাউন্টার করতে পারি।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিবসহ অন্য কর্মকর্তারা, স্টার নিউজের হেড অফ নিউজ ওয়ালিউর রহমান মিরাজ, মাছরাঙ্গা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি নিয়াজ মোর্শেদ, আনন্দ টিভির নিউজ ইনচার্জ জয়নাল আবেদীন, এটিএন বাংলার চিফ রিপোর্টার একরামুল হক সায়েম সংলাপে অংশ নেন।

সিইসি সবার আলোচনা শেষে বলেন, ‘অনেক মূল্যবান পরামর্শ এসেছে। আমরা যতটুকু পারি আপনাদের পরামর্শ বিবেচনা করব। আপনারাদেরকে আমরা সত্যিকারের পার্টনার হিসেবে পেতে চাই। জনগণের কাছে আমাদের বার্তা একমাত্র মিডিয়াই পৌঁছাবে। আপনারা ছাড়া কোনো উপায় নেই। আমরা মিডিয়াকে এক্সেস দিতে চাই। আমাদের নিয়তের মধ্যে কোনো গলদ নাই। নিয়ত একদম পরিষ্কার। মিডিয়ার জন্য আমাদের দরজা সবসময় খোলা।’

সিইসি বলেন, ‘আমাদের মিডিয়ার এন্ট্রি রেস্ট্রিকশন করার কোনো উদ্দেশ্য কাজ করে নাই। একটা লিগ্যাল রিকোয়ারমেন্ট আছে। আমাকে একটা দেশের অ্যাম্বাসেডর চিঠি লিখেছিলেন যে, অবজারভারের (পর্যবেক্ষক) জন্য কেন আবার প্রিজাইডিং অফিসারের পারমিশন লাগবে। একই কথা আপনারা বলছেন। ইট ইজ আ লিগ্যাল রিকোয়ারমেন্ট অব আরপিও। কারণ ওই দিনের জন্য প্রিজাইডিং অফিসার সর্বেসর্বা। আমার ইলেকশন কমিশনের ক্ষমতা কিন্তু উনার কাছে অর্পিত। প্রিজাইডিং অফিসারই ডিসিশন মেকার। দেখেন ভোটের রুমটা অনেক ছোট। এখানে প্রিজাইডিং অফিসার, ল’এনফোর্সমেন্টের লোক থাকে, পোলিং অফিসার, এজেন্ট থাকে, অবজারভার থাকে, সাংবাদিকরা থাকে। এখন সবাই যখন একটা রুমে লাইভ করার জন্য ঢুকে পড়ে তাহলে স্পেসের একটা সমস্যা হতে পারে। এই ম্যানেজমেন্টটাই প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে ন্যস্ত আছে। তাই এটা কোনো পারমিশন না, এটাকে ইনফর্ম করার মতো মনে করেন।’

সারাবাংলা/এনএল/এইচআই

ইসি গণমাধম্য কর্মী নির্বাচন সংলাপ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর